রাজমিস্ত্রির সহকারী থেকে সরকারি চাকুরে অদম্য জহিরুল

অদম্য মেধাবী মো. জহিরুল ইসলাম বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের জুনিয়র হিসাব সহকারী হিসেবে কর্মরত।

কুমিল্লার দাউদকান্দি বরকোটা গ্রামের অদম্য মেধাবী মো. জহিরুল ইসলাম। তাঁর বাবা বাঁশের তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি করে সংসার চালতেন। বাবার আয়ে সংসার চলত না বলে জহিরুলও হাটে জালির ব্যাগ বিক্রি করতেন, দোকানে দোকানে গিয়ে ব্যাগ দিতেন। এক সময় পড়াশোনা বাদ দিয়ে ইলেকট্রিক কাজও করেছেন। পরে রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসাবে কাজ করেছেন। এত কিছুর মধ্যেও পড়াশোনায় ফাঁকি দেননি তিনি। সব সময় ভালো ফল করেছেন। হয়েছেন সফলও। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের জুনিয়র হিসাব সহকারী হিসেবে কর্মরত।

জহিরুল ছোট থেকেই একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তাঁর সহায়তায় এগিয়ে এসেছিল অনেকেই। জহিরুল যেই দোকানে জালির ব্যাগ বিক্রি করত, সেই দোকানের মালিক জহিরুলকে একটি গাইড বই দিয়েছিল, এমনকি জহিরুলের শিক্ষকেরা মাসের বেতন নিতেন না।

এসএসসি পরীক্ষা দিয়েই অদম্য জহিরুল নানান কাজে লেগে পড়েন পরিবারকে সহযোগিতা করার জন্য। কাজ করেন রাজমিস্ত্রি সহকারী হিসেবে। এমতাবস্থায় এসএসসিতে ভালো ফলাফল করলেন তিনি। সে বছর এসএসসি ফলে দাউদকান্দিতে সপ্তম স্থান ও নিজের স্কুলে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন তিনি। এ নিয়েও দুশ্চিন্তায় পড়লেন, এত ভালো ফলাফল নিয়ে কত দুর আগাতে পারবেন?

ওই সময়টাতে জহিরুলের প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক আজিজুর রহমান স্যার প্রথম আলোর স্থানীয় প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। পরে প্রথম আলোর স্থানীয় প্রতিনিধি জহিরুলদের বাড়িতে যান। তাদের খোঁজ-খবর নিয়ে প্রথম আলো প্রতিবেদন করেন। পরে তাঁর ভালো ফল, পড়াশোনার প্রতি অদম্য ইচ্ছা ও পারিবারিক অবস্থা বিবেচনায় তাঁকে ‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিল’ থেকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়। এই শিক্ষাবৃত্তি পেয়ে জহিরুল এইচএসসি ও স্নাতক পর্যন্ত পড়াশোনা সম্পন্ন করেন।