চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে দেওয়া কথা রেখেছিলেন উত্তম
প্রথম আলো ট্রাস্ট ২০১০ সালে এসএস সি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া দরিদ্র অথচ মেধাবী এমন ৫০ জনকে সংবর্ধনা দিয়েছিল। সারা দেশ থেকে ঢাকায় এনে তাদের অনুষ্ঠানে হাজির করা হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন । সাতক্ষীরা আশাশুনি থেকে এসেছিলেন অদম্য মেধাবী হিসেবে উত্তম কুমার সরদার । চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন তাকে বলেছিলেন এইচএসসিতে ভালো করলে আবার দেখা হবে। সাতক্ষীরা জেলা থেকে ওই অনুষ্ঠানে ৫ জন এসেছিলেন।
২০১২ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পান উত্তম কুমার সরদার। চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে দেওয়া কথা রেখেছিলেন তিনি। উত্তম কুমার বলেন, ‘ওই অনুষ্ঠান থেকে বের হয়ে জেদ চেপেছিল মনে। আর যাই করি না কেন, এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেতেই হবে।’ এভাবেই নিজের কথা বলেন ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্টের শিক্ষাবৃত্তি প্রাপ্ত অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী উত্তম কুমার সরদার।
উত্তমের বাবা অ্যাজমা রোগী, বাড়িতে শুয়ে থাকেন। উত্তম একমাত্র ছেলে আর ২ বোন। অভাবের তাড়নায় পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াকালীন এক বোনের বিয়ে হয়। মা সংসার চালানোর জন্য অন্যের খেতে দিনমজুরের কাজ করতেন। মায়ের সঙ্গে উত্তম কুমারও কখনো মাদুর বুনতেন, কখনও সবজি চাষ করে তা বিক্রি করতেন। আবার দৈনিক শ্রমিক হিসেবেও কাজ করেছেন । পাশাপাশি পড়াশোনা করে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পান। সার্বিক বিচারে ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্টের শিক্ষাবৃত্তির আওতায় তাঁকে এইচএসসি ও স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হয়। শিক্ষাবৃত্তি পেয়ে পড়াশোনা করে উত্তম বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিষয়ে ভর্তি হন।স্নাতক সম্মানে সিজিপিএ-৩.০২ পেয়ে প্রথম শ্রেণি পান । একই বিষয়ে মাস্টার্সেও সিজিপিএ ৩.০৩ পেয়ে প্রথম শ্রেণি পান। বর্তমানে বিসিএসসহ অন্যান্য চাকরি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ।
উত্তম কুমার বলেন, ‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্টের শিক্ষাবৃত্তির টাকায় পড়াশোনা করেছি । এই বৃত্তি না পেলে পড়াশোনা করা হতো না। এ বছর বাবা মারা গিয়েছে । আরেক বোন এইচএসসি পাস করিয়ে বিয়ে দিয়েছি। আমি সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছি। আশা করছি, ভালো কিছু করতে পারব।’