মেঠো পথ পেরিয়ে অদম্য টুম্পা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে

‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট’ অদম্য মেধাবী তহবিল থেকে শিক্ষা বৃত্তিপ্রাপ্ত টুম্পা রানী সিংহ এখন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।

ঝিনাইদহ জেলার, কোর্টচাঁদপুর উপজেলার একটি গ্রাম বাগডাঙ্গাঁ। ভোরের আলো ফোটার আগে সেই গ্রামের মেঠো পথ ধরে কৃষি শ্রমিক কালীচরণ সিংহ বেরিয়ে পড়েন কাজের সন্ধানে। প্রতিদিন মাঠের কাজ পেতেই হবে। না হলে থমকে যাবে দুই সন্তানের লেখাপড়া। কালীচরণ বছরের পর বছর উদয়-অস্ত খেটে সচল রেখেছেন পরিবারের অর্থনীতির চাকা। আর বড় মেয়ে টুম্পা রানী সিংহ বাবার হাড়ভাঙা পরিশ্রমের প্রতিদান হিসেবে ভালো ফলাফল করে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে পা রেখেছেন।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী টুম্পা রানী সিংহ ২০২০ সালে বলাবাড়িয়া বাগডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাতেও ধরে রাখেন সাফল্য। এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উজ্জ্বল করেন পরিবারের মুখ।

কথা প্রসঙ্গে টুম্পা রানী সিংহ বলেন, ‘বাবার কঠোর পরিশ্রম খুব কাছ থেকে দেখেছি। নিজেদের বলতে এক চিলতে বাড়ি ছাড়া আর কোন জমি জায়গা নেই। বছরের পর বছর বাবার হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে আমাদের পড়ালেখার খরচ জুগিয়েছেন। শত কষ্ট মুখ বুজে সয়েছি কিন্তু পড়ালেখার পথ থেকে বিচ্যুত হইনি। আমার এই যাত্রা পথে ‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট’ আমাকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে বৃত্তি দিয়েছে। আমি এই দুই প্রতিষ্ঠানের কাছে কৃতজ্ঞ।’

টুম্পা রানী সিংহের পিসি মুক্তা কর্মকার ৪১ তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগ পেয়েছেন। টুম্পা রানী সিংহ স্বপ্ন দেখেন পিসির মতো ভালোভাবে পড়ালেখা শেষ করে বিসিএস উত্তীর্ণ হয়ে পরিবারের হাল ধরবেন, ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া ছোট ভাই পার্থ সিংহের দায়িত্ব নেবেন।

উল্লেখ্য, টুম্পা রানী সিংহের স্বপ্নপূরণের পথে আবারও পাশে দাঁড়িয়েছে ‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট’ অদম্য মেধাবী তহবিল। এই তহবিলের সহায়তায় এইচএসসিতে সাফল্য ধরে রেখেছেন তিনি। পরে স্নাতক পর্যায়ের পড়াশোনার জন্যও এই তহবিল তাঁকে মনোনীত করে।