ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্টের শিক্ষাবৃত্তি প্রাপ্ত অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী আয়াতুল্লাহ মৃধা ২০২১-২২ সেশনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ‘সি’ ইউনিটে বাণিজ্য বিভাগ থেকে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন। তিনি ২০২০-২১ সেশনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমে ইংরেজি ও পরে মাইগ্রেশনে আইন বিভাগে ভর্তি হয়ে অধ্যয়নরত।
এই সফলতার পেছনে রয়েছে অনেক দিনের সংগ্রাম ও হাড় ভাঙা পরিশ্রম। বাবা মোস্তফা মৃধা ঢাকার রামপুরায় বাবুর্চির কাজ করেন। তবে তিনি উচ্চ রক্তচাপসহ নানা রোগে ভুগছেন। যা আয় করেন, নিজের ওষুধসহ ভরণপোষণেই খরচ হয়ে যায়। মা শাহিনুর বেগম যক্ষ্মা রোগী। তাদের জমিজমা নেই।
বৃত্তি সহায়তায় এইচএসসি ও বর্তমান স্নাতক (সম্মান) পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। পড়াশোনার পথ মসৃণ করার জন্য ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্টের প্রতি কৃতজ্ঞ আমি।
পরিবারের এই অবস্থায় এসএসসি পরীক্ষার আগ পর্যন্ত পরিবার ও নিজের পড়াশোনার খরচ মেটাতে করেছেন নানা কাজ। কখনো নারকেলগাছ পরিষ্কার করা (বাছা), কখনো মাছ ধরা এবং মৌসুমে ইটভাটায় কাজ করতে হয়েছে তাঁকে। এভাবেই অদম্য ইচ্ছাশক্তি নিয়ে পড়াশোনা চলিয়েছেন। পরে ২০১৮ সালে সবাইকে চমকে দিয়ে ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে জিপিএ-৫ পান। ২০২০ সালে নটর ডেম কলেজের বাণিজ্য বিভাগ থেকে পুনরায় জিপিএ-৫ পেয়ে সাফল্য ধরে রাখেন। তিনি পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। আয়াতুল্লাহ পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার পুরান মহিপুর গ্রামের বাসিন্দা।
আয়াতুল্লাহ জানান, ‘এসএসসি পরীক্ষার আগে পরিবারের দুর্দশাটা বেড়ে যায়। মায়ের যক্ষ্মা ধরা পড়ে। কোনো উপায় না পেয়ে এসএসসি পরীক্ষার তিন মাস আগে ইটভাটার কাজ শুরু করি। দিনে কাজ আর রাতে পড়াশোনা করে এসএসসিতে কলাপাড়ার মহিপুর কো-অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় জিপিএ-৫ পাই। আমার এই সফলতার গল্প প্রথম আলোয় তোলে ধরা হয়। একই সঙ্গে শিক্ষাবৃত্তিতে অন্তর্ভক্ত করা হয়। সেই বৃত্তি সহায়তায় এইচএসসি ও বর্তমান স্নাতক (সম্মান) পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। পড়াশোনার পথ মসৃণ করার জন্য ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্টের প্রতি কৃতজ্ঞ আমি। আমি আশা করি ভালো কিছু উপহার দিতে পারব।’