অদম্য নাহিদ এখন মেডিকেল কলেজের ছাত্র
মাত্র পাঁচ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছেন নূর ইসলাম নাহিদ। আর্থিক অসঙ্গতির কারনে কলেজে পড়া নিয়ে ছিল অনিশ্চয়তা। কিন্তু অদম্য মনোভাব ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সব বাধা পেরিয়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তিনি। ২০২৩–২০২৪ সালের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সুনামগঞ্জের বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন নূর ইসলাম নাহিদ।
২০১০ সালে নাহিদের বাবা নূর আলম সিদ্দিকী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা যান। দুই ভাই এক বোনের সংসারে নাহিদ সবার ছোট। তিন ছেলে-মেয়ে নিয়ে সৈয়দপুর শহরের গোলাহাট মহল্লার একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন নাহিদের মা শিল্পী বেগম। সংসারে খরচ মেটাতে গোলাহাট স্কুল ও কলেজে সামান্য আয়ার চাকরি নেন তিনি। তখন থেকেই চলতে থাকে ছেলে-মেয়েদের মানুষ করার লড়াই। ছেলে নাহিদকে ভর্তি করেন শহরের লায়ন্স স্কুল ও কলেজে। এরই মধ্যে দুই বোনের বিয়ে হয়ে যায়।
এদিকে, পড়াশোনায় ভালো নাহিদের এসএসসি পর্যন্ত পাশে ছিলেন হাজারীহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ লুৎফর রহমান চৌধুরী। তাঁর সহযোগিতায় ২০২১ সালে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন নাহিদ। এ সময় তাঁকে নিয়ে প্রথম আলোয় প্রতিবেদন পাঠান সৈয়দপুর প্রতিনিধি। পরে নাহিদের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় ‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তির’ আওতায় নেওয়া হয়। বৃত্তি সহায়তায় ভালো করে পড়াশোনা করে ২০২৩ সালে অনুষ্ঠেয় এইচএসসি পরীক্ষায়ও সাফল্য ধরে রাখেন। জিপিএ-৫ পান। বর্তমানে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সুনামগঞ্জের বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন নাহিদ।
এ প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, ‘মায়ের স্বপ্ন ছিল আমি যেন মেডিকেলে চান্স পাই। মায়ের কথা রেখেছি। আমার প্রত্যাশা, আমি যদি চিকিৎসক হতে পারি তাহলে গরিবের ডাক্তার হব। অসহায় শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াব। যেভাবে আমার পাশে দাঁড়িয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট।
উল্লেখ্য, নূর ইসলাম নাহিদের স্বপ্নপূরণের পথে আবারও পাশে দাঁড়িয়েছে ‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট’। তিনি স্নাতক পর্যায়েও এই শিক্ষাবৃত্তির জন্য মনোনীত হয়েছেন।