সার্জারি বিশেষজ্ঞ হতে চান এমবিবিএস অধ্যয়নরত অদম্য পলাশ

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী মো. পলাশ হোসেন।

প্ল্যানেটারি হেলথ অ্যাকাডেমিয়া ট্রাস্ট-প্রথম আলো ট্রাস্ট মেডিকেল শিক্ষাবৃত্তি পাওয়া অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী মো. পলাশ হোসেন। প্রতিকূলতা অতিক্রম করে স্বপ্নের পথে এগিয়ে চলেছেন আপন গতিতে। তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত আছে ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে। সম্প্রতি তাঁর এমবিবিএস প্রথম প্রফেশনাল পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে। সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি।

ছোটবেলা থেকে পলাশের স্বপ্ন, তিনি চিকিৎসক হবেন। সেই স্বপ্ন পূরণে অভাব-অনটনের মধ্যেও নিরলস পরিশ্রম করে গেছেন তিনি। পড়ালেখার খরচ চালাতে কখনো পানের বরজ, কখনো কৃষিশ্রমিক হিসেবে কাজ করেছেন। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার পর মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায়ও কৃতিত্ব দেখিয়েছেন।

পলাশ হোসেনের বাড়ি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়নে। ওই ইউনিয়নের পাঁচকমলাপুর গ্রামের মো. হাবিবুর রহমান ও মোছা. রেক্সোনা খাতুনের ছেলে তিনি।  তিন ভাই-বোনের মধ্যে পলাশ দ্বিতীয়। এইচএসসি পাসের পর বড় বোন ঋতুর বিয়ে হয়ে গেছে। একমাত্র ছোট ভাই পিয়াস হোসেন অপাঁচকমলাপুর-লিয়াটনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দেবে। পলাশ নিজেও একই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে মাধ্যমিক ও চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন।

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী মো. পলাশ হোসেন। হতে চান একজন সফল সার্জারি বিশেষজ্ঞ।

পলাশ হোসেন বলেন, তাঁর বাবা একজন বর্গাচাষি। ফসল ফলানোর জন্য শ্রমিক কম হওয়ায় তিনি ও তাঁর বাবা কাজ করতেন। পাশাপাশি অন্যের জমিতেও শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন তিনি। স্কুল-কলেজে যাওয়ার আগে সকালে পানের বরজে দৈনিক ১০০ টাকা মজুরিতে খণ্ডকালীন শ্রমিক হিসেবে কাজ করেছেন। স্কুলজীবন থেকে এভাবে পড়াশোনার খরচ চালিয়েছেন। শিক্ষাবৃত্তি ও শিক্ষকদের সহযোগিতাও পেয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, সবকিছু ঠিক থাকলে সার্জারিতে বিশেষজ্ঞ হতে চান তিনি। তাঁর লক্ষ্য, চিকিৎসক হয়ে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করবেন। মা–বাবার মুখে হাসি ফোটাবেন।

উল্লেখ্য, সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশি চিকিৎসকদের সংগঠন ‘প্ল্যানেটারি হেলথ অ্যাকাডেমিয়া ট্রাস্ট’ এর সহযোগিতায় প্রথম আলো ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় ২০২৩ সাল থেকে মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি দিয়ে আসছে। এই শিক্ষাবৃত্তির আওতায় প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. পলাশ হোসেন। এমবিবিএস কোর্স শেষ হওয়া পর্যন্ত এই বৃত্তি পাবেন তিনি।