আইনি সহায়তার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে চায় মনিরা

পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার পশ্চিম ধুলাসার গ্রামের অদম্য মেধাবী মনিরা।

পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার পশ্চিম ধুলাসার গ্রামের দরিদ্র পরিবারের মেয়ে মনিরা। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি বিশেষ আগ্রহ ছিল তার। কিন্তু পারিবারে অভাব অনটনের মধ্যে অনেক বাধা পেতে হয়েছে। তারপরও থেকে যায়নি, মাধ্যমিক থেকেই টিউশন করে নিজের পড়াশোনার খরচ বহন করেছেন মনিরা। তারপরও অদম্য চেষ্টা ও মনোবল নিয়ে পড়াশোনা করে এসএসসি ও এইচএসসিতে মানবিক বিভাগে জিপেএ-৫ অর্জন করেছেন। একই সাথে এবার ২০২২-২৩ সেশনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। এখন দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত, অক্টোবরে চূড়ান্ত পরীক্ষা হওয়া কথা। বর্তমানে তিনি অনুরণ-প্রথম আলো ট্রাস্টের শিক্ষাবৃত্তি সহায়তায় পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্নাতক শেষ করে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বিজেএস) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী জজ হওয়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন মনিরা। পড়াশোনা শেষ করে আইনগত সহায়তার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোই তাঁর মূল লক্ষ্য।

মনিরার বাবা-মা, দুই ভাই,ভাবিসহ ৯ সদস্যের পরিবার। বসতভিটা ছাড়া কোনো জমি নেই। দুইভাই বিয়ে করে আলাদা থাকেন। একভাই অটো চালান। বাবা ফোরকান হাওলাদার একজন দিনমজুর। যখন কাজ থাকে না, তখন মাছ ধরে বিক্রি করেন। এখন অবশ্য বয়সের কারণে এবং অসুস্থ্য থাকায় কাজে যেতে পারেন না বেশি। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা কিভাবে চালাবেন, সেটা নিয়ে চিন্তিত মনিরা। কারণ বাবার পক্ষে পরিবারের ব্যয় বহন করে তার পড়াশোনার ব্যয় বহন করা অসম্ভব।

মনিরার হাতে ল্যাপটপ তুলে দেন থিয়েটার অ্যাকটিভিস্ট ও শিক্ষক তৌফিকুল ইসলাম ইমন এবং প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ও প্রথম আলো ট্রাস্টের ট্রাস্টি আনিসুল হক। এ সময় অন্যান্য অতিথিগণ উপস্থিত ছিলেন। গত ২৮ জুন কারওয়ান বাজারের প্রথম আলো কার্যালয়ে।

স্বপ্নবাজ মনিরা জীবনে নানা প্রতিকূলতা পাড়ি দিয়ে আজকের অবস্থানে পৌঁছেছেন। তাঁকে শিক্ষাবৃত্তি দেওয়ার পাশাপাশি তথ্য ও প্রযুক্তিতে দক্ষ করা এবং একাডেমিক কাজে সহায়তার জন্য ২৮ জুন প্রথম আলো কার্যালয়ে ল্যাপটপ প্রদান করা হয়েছে। অনুরণের সহায়তায় বৃত্তি পাওয়া ৮ জন শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয়েছে এই ল্যাপটপ। মহতী উদ্যোগে প্রথম আলো ট্রাস্টের সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য অনুরণের সকল সদস্যকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।