দরিদ্র পরিবারের ছেলে মো. জুলফিকার। অভাব অনটনের মধ্যেও নিজের আগ্রহ ও গৃহিণী মা হাসিনা আক্তারের এক বান্ধবীর সহায়তায় পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন তিনি। পরিশ্রমের ফল পেয়েছেন হাতেনাতে। এ বছর অনুষ্ঠেয় এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে যাত্রাবাড়ীর তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি। কিন্তু কলেজ ভর্তি হবেন কিভাবে, পড়াশোনা চালাবেন কিভাবে—সেই দুশ্চিন্তায় ছিলেন জুলফিকার ও তাঁর বাবা। শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা হওয়া এখন অনেকটা নির্ভার তাঁরা।
পড়াশোনার প্রতি জুলফিকারের অদম্য ইচ্ছা ও পারিবারিক অবস্থা বিবেচনায় প্রথম আলো ট্রাস্টের অদম্য মেধাবী তহবিল থেকে শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়। বৃত্ত বিল্ডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হামিদুল ইসলামের সহযোগিতায় প্রথম আলো ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় জুলফিকারকে এইচএসসি পর্যায়ে দুই বছর শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হবে।
জুলফিকারের বাবা মো. জাহিদুল ইসলামের বাড়ি পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার নাংগুলী গ্রামে। বসতভিটা ছাড়া কোনো জমাজমি নেই তাঁর। ২০০৩ সালে কাজের সন্ধানে ঢাকা আসেন তিনি। পরে বিয়ে করে এখানেই থেকে যান। বর্তমানে তিনি বাংলাবাজারে মাহমুদ পাবলিকেশনস নামের একটি ছোট প্রকাশনীতে চাকরি করেন। বেতন সর্বসাকল্যে ১৫ হাজার টাকা। এই অল্প আয় দিয়ে তিন সন্তানসহ মোট ৫ সদস্যের পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকতে হয় তাঁকে। ফলে পরিবার চালাতেই হিমশিম খেতে হয়। এদিকে তাঁর ছোট দুই ছেলেও পড়াশোনা করে।
মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, এই শিক্ষাবৃত্তিটা আমার জন্য এক বিশাল পাওনা। কেননা ছেলে এখন কলেজে পড়বে। তার পড়াশোনার খরচও বাড়বে। এদিকে আমার আয় রোজগারও কম। ফলে আমাকে খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হতো। এখন এই শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা হওয়ায় দুশ্চিন্তা অনেকাংশে কমে গেল। আমি চিন্তামুক্ত হলাম। আমি আপনাদের মঙ্গল কামনা করি।’
মো. জুলফিকার বলেন, আমি এই শিক্ষাবৃত্তি পেয়ে খুবই আনন্দিত। আমি আমার পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। এখন আমি নিশ্চিন্তে পড়াশোনা চালিয়ে যাব। আমার স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়ার পথে সহায়ক হবে এই বৃত্তি। তা ছাড়া এই সহায়তার দরুন আমার বাবার কষ্ট অনেকাংশেই লাঘব হবে।’