অদম্য রকিবুলের এগিয়ে যাওয়ার গল্প

ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তি পাওয়া জামালপুরের রকিবুল হাসান।

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে গ্রামের মোরে ছোট চায়ের দোকান করতেন মো. রকিবুল হাসানের বাবা। অসুস্থ থাকায় এখন (২০২৪ সাল) আর করেন দোকান করতে পারেন না। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে রকিবুল বড়। ছোট ভাই স্থানীয় কলেজে ডিগ্রি পড়ছে। টিউশনি করে, কোচিংয়ে ক্লাস নিয়ে কিছু আয় করে ছোট ভাই। বোন স্কুলে পড়ে। রকিবুল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করে বর্তমানে ইনস্টিটিউট অফ ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউএম) জিআইএস এনালিস্ট হিসেবে চাকরি করছেন। তিনিই আর তাঁর ছোট ভাই মিলে পরিবারে খরচ জোগান।

ভালো ফল করায় শিক্ষকেরা অনেক খুশি হন। কিন্তু আমার মনে ছিল দু: চিন্তা। কীভাবে কলেজে ভর্তি হব! ওই সময়টাতে প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি আমাদের বাসায় আসেন। সব দেখে আমাকে নিয়ে প্রতিবেদন করেন— বললেন রকিবুল হাসান।

রকিবুল তাঁর ছোটবেলার গল্প বলেতে গিয়ে বলেন, ‘বাবা চায়ের দোকান করতেন। অন্যদের মতো আমার তেমন সুযোগ ছিল না। অন্যরা সাইকেলে স্কুলে গেলেও আমি ভোর ৬টা ওঠে হোমওয়ার্ক শেষ করে ৮ কিলোমিটার হেঁটে স্কুলে যেতাম। ষষ্ঠ থেকে এসএসসি পর্যন্ত প্রতিদিন ৮ কিলোমিটার করে ১৬ কিলোমিটার যাতায়াত করতাম হেঁটে। তারপরও ষষ্ঠ থেকে দশম পর্যন্ত ক্লাস রোল ১ ছিল আমার। সবার সহায়তায় আমি ২০১০ সালে এসএসসিতে মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে জেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলাম।’

পরক্ষণেই রকিবুল জানান, ‘ভালো ফল করায় শিক্ষকেরা অনেক খুশি হন। কিন্তু আমার মনে ছিল দু: চিন্তা। কীভাবে কলেজে ভর্তি হব! ওই সময়টাতে প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি আমাদের বাসায় আসেন। সব দেখে আমাকে নিয়ে প্রতিবেদন করেন। পরে আমার পারিবারিক অবস্থা বিবেচনায় আমাকে ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হয়। এই শিক্ষাবৃত্তির সহায়তায় এইচএসসি ও স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ে পড়াশোনা করেছি। সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। সহায়তা না পেলে আজকের এই জায়গায় পৌঁছাতে পারতাম না হয়তো।