অদম্য নাজমিনের ঈদের আনন্দ হয়েছে দ্বিগুণ

অদম্য মেধাবী নাজমিন বেগম।

‘আগে বাবার কাছ থেকে অল্পকিছু হলেও ঈদের উপহার পেতাম। এখন আমি আমার ভাই–বোন থেকে শুরু করে আত্মীয়– স্বজন সকলকেই ঈদে কিছু না কিছু উপহার দেই। কাউকে উপহার দেওয়ার মধ্যে এক অন্যরকম আত্মতৃপ্তি রয়েছে। যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।’ বলছিলেন অদম্য মেধাবী নাজমিন বেগম। প্রথম আলো ট্রাস্ট– ব্র্যাক ব্যাংক অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তি প্রাপ্ত নাজমিন বর্তমানে ইনডোর মেডিকেল অফিসার হিসেবে সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজে কর্মরত রয়েছেন।

সিলেটের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে আসা অদম্য মেধাবী নাজমিন বেগম সাহস ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সব প্রতিকূলতাকে মোকাবেলা করে সফল হয়েছেন। বর্তমানে চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করছেন তিনি।

অতীত দিনের স্মৃতিচারণ করে নাজমিন বেগম বলেন, ‘এক একটা করে বাধা পাহাড়সম মনে হত। কিন্তু কখনো হার মানিনি। বাবার একটা কথাকেই জীবনের পাথেয় করেছিলাম। তিনি বলতেন পড়াশোনার পথে থাকলে, ভালো ফল করলে, জীবন আলোকিত হবেই।’

নাজমিন বেগম বাবা রফিক উদ্দিনের কথাকে সত্য প্রমানিত করেছেন। প্রবল ইচ্ছা ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ২০১০ সালে মাধ্যমিক ও ২০১২ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি।  উচ্চমাধ্যমিক ও এমবিবিএস পর্যায়ে পান ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তি। বর্তমানে যে প্রতিষ্ঠান থেকে এমবিবিএস পাশ করেছেন সেই সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজেই ইনডোর মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। নাজমিন বেগমের জীবনসঙ্গী তুহিনুল হক পেশায় গনমাধ্যমকর্মী। এই দম্পতীর কোল আলো করে এসেছে কন্যা শিশু  ফাতেমা হক তাইয়্যেবা। এ প্রসঙ্গে নাজমিন বেগম বলেন, এখন আমার ঈদের আনন্দ হয়েছে দ্বিগুণ। মেয়ের মুখ থেকে যখন আধো বুলি শুনি তখন আমার পরিশ্রমকে সার্থক মনে হয়। তবে এই আনন্দ আরও শতগুন হতে পারতো। কিন্তু আমার বাবা বেঁচে নেই। দুই বছর আগে দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সার আমাদের থেকে তাকে কেড়ে নিয়েছে।’

বাবার কথাকে পাথেয় করেই সামনের পথটুকু চলত চান নাজমিন বেগম। ভবিষ্যতে পোস্টগ্র্যাজুয়েট কোর্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাশাস্ত্রে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে মানুষের সেবা করতে চান তিনি।