মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করার স্বপ্ন পাপিয়ার

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ফাউন্ডেশন ও প্রথম আলো ট্রাস্টের শিক্ষাবৃত্তি পাওয়া কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার কামালপুর গ্রামের মেয়ে পাপিয়া সুলতানা।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার কামালপুর গ্রামের দরিদ্র পরিবারের মেয়ে পাপিয়া সুলতানা। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও অদম্য ইচ্ছা ও কঠোর পরিশ্রম করে পড়াশোনা চালিয়েছেন তিনি। পরিবারের অসচ্ছলতা মধ্যেও ২০২৩ সালে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হন। পরে কলেজে পড়ার খরচ নিয়ে অনেকটা শঙ্কায় পড়ে যান। এমতাবস্থায় পাশে দাঁড়ায় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ফাউন্ডেশন (এমটিবি ফাউন্ডেশন)। প্রথম আলো ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় পাপিয়া সুলতানাকে দুই বছর মেয়াদি শিক্ষাবৃত্তির আওতায় আনা হয়।

এই শিক্ষাবৃত্তির সহায়তায় পড়াশোনা করে পাপিয়া এ বছর খলিশাকুন্ডি ডিগ্রি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। লিখিত পরীক্ষা শেষ হলেও প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা চলমান তাঁর।

পাপিয়া সুলতানার বাবা মারুফ হোসেন পেশায় কৃষক। জমি বর্গা নিয়ে কৃষি কাজ করেন। অন্যের জমিতেও কাজ করেন। মা রঙ্গিলা খাতুন গৃহিণী। মারুফ হোসেন কিডনি রোগী হওয়ায় এখন আর তেমন কাজ করতে পারেন না।তা ছাড়া কিডনি রোগের চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়া ঠিকমতো চিকিৎসা করাতে পারছেন না। তাঁর তিন মেয়ের মধ্যে পাপিয়া মেজো। বড় মেয়ে কুষ্টিয়াতে ইংরেজিতে অনার্সে ভর্তি হয়েও পরিবারের অভাবের কারণে ছেড়ে দিয়েছে।

পড়াশোনায় ভালো পাপিয়া চিকিৎসক হতে চায়। তাঁর বাবার মতো যারা টাকার অভাবে চিকিৎসা পাচ্ছে না, তাদের পাশে দাঁড়াতে চায়। নিজ পরিবার ও মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখার স্বপ্ন দেখেন পাপিয়া।

পাপিয়ার মা বলেন, ‘তাঁর মেয়ে ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় অনেক ভালো। তাই সব সময়ই তার শিক্ষকেরা সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু সেটা যথেষ্ট ছিল না। প্রথম আলো ট্রাস্ট ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এই বৃত্তি আমার চিন্তা দূর করেছে। তা না হলে অসুস্থ স্বামীর চিকিৎসা খরচের পর তার মেয়ের পড়ালেখার খরচ দেওয়া সম্ভব ছিল না।’

উল্লেখ্য, নারী শিক্ষা ও ক্ষমতায়নে প্রথম আলো ট্রাস্টের শিক্ষাবৃত্তি প্রকল্পে সহায়তা প্রদান করছে এমটিবি ফাউন্ডেশন। এ উপলক্ষে এমটিবি ফাউন্ডেশন ও প্রথম আলো ট্রাস্টের মধ্যে দুই বছর মেয়াদি এক সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ২০২৪ সালের ৪ মার্চ মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসির করপোরেট হেড অফিসে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। দুই বছর মেয়াদি এই চুক্তির মধ্য দিয়ে ৫ জন অসচ্ছল মেধাবী নারী শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া শুরু হয়।