শিক্ষা সহায়তা পেলেন এমবিবিএস শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস

ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী পাবনার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস মারিয়াম।ছবি: প্রথম আলো।

পবানার ভাঙ্গুড়া উপজেলার দহপাড়া গ্রামের দরিদ্র পরিবারের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস মারিয়াম। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও অদম্য ইচ্ছা ও কঠোর পরিশ্রম করে পড়াশোনা চালিয়েছেন, হয়েছেন সফলও। বর্তমানে তিনি এমবিবিএস পড়ছেন মগবাজারে অবস্থিত ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে। অসচ্ছল মেধাবী কোটায় এখানে সুযোগ পান তিনি। এখন চতুর্থ বর্ষে অধ্যয়নরত। তবে চিকিৎসক হওয়ার শেষ ধাপে পড়াশোনা চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁকে। এমতাবস্থায় পাশে দাঁড়িয়েছে প্রথম আলো ট্রাস্ট। প্রথম আলো ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় প্রয়াত লেখক মুশতাক আহমেদের মায়ের সহযোগিতায় তাঁকে এককালীন ৫০ হাজার টাকার শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে।

জান্নাতুল ফেরদৌসের বাবা জাহাঙ্গীর ইসলাম পেশায় সরিষার তেল বিক্রয়কর্মী। তাঁর মাসিক বেতন ৯ হাজার টাকা। এই অল্প আয়ে ৫ সদস্যের পরিবারের খরচ চালিয়ে মেয়েকে খরচ দেওয়া কঠিন।

জাহাঙ্গীর ইসলাম জানান, ‘কলেজ থেকে টিউশন ফি মওকুফ করলেও মাসিক থাকা-খাওয়া ও অন্যান্য উপকরণ বাবদ খরচ দিতে হয়। এতদিন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এবং কোনোভাবে ব্যবস্থা করে আসছেন। এখন আর কোনোভাবে চালানো সম্ভব হচ্ছিল না। প্রথম আলো ট্রাস্টের এই আর্থিক সহায়তা আমার মেয়ের চিকিৎসক হওয়ার পথকে সহজ করল। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।’

জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘আমরা তিন বোন, ছোট দুই বোন পড়াশোনা করে। বাবা সামান্য ব্যবসা করে সংসার চালান। অনেক কষ্ট করেই এ পর্যন্ত এসেছি। এখন আর বাবার পক্ষে চালানো সম্ভব হচ্ছিল না। এমতাবস্থায় প্রথম আলো ট্রাস্ট আমার পাশে দাঁড়াল। এটা আমাকে মানসিকভাবে শক্তি জোগাল। আমার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নপূরণে সারথি হলো। আমি ধন্যবাদ দিতে চাই প্রথম আলো পরিবারকে আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য।’

স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমি একজন মানবিক ডাক্তার হতে চাই। এমবিবিএস শেষে বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার হতে চাই। কার্ডিওলজিতে একজন দক্ষ সার্জন হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চাই। সেই সঙ্গে দেশে অসহায়, সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চাই। মানুষকে বিনা মুল্যে চিকিৎসা সেবা দিতে চাই।’