রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় শ্রীপুর গ্রামের ছেলে মো. শামীম রেজা। ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিল থেকে শিক্ষাবৃত্তি পেয়ে পড়াশোনা করেছেন। তিনি গত বছরের ৩০ মে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডে হিসাবরক্ষক পদে নিয়োগ পেয়েছেন। বর্তমানে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় কর্মরত তিনি।
এ পর্যন্ত আসা সহজ ছিল না শামীমের জন্য। অনটনের সংসারে অনেক প্রতিকূলতা মোকাবিলা করতে হয়েছে তাঁকে। কারণ বাবার ভ্যান চালানোর আয়ে সংসার ঠিকমতো চলত না। তাই পরিবারে কিছুটা জোগান দিতে শামীম অন্যের জমিতে ধান কাটা, ধান লাগানোসহ নানা কাজ করেছেন। যেদিন এসএসসির ফল প্রকাশ হয়, সেদিনও শামীম অন্যের জমিতে ধান কাটার কাজ করছিলেন। সন্ধ্যার দিকে জানতে পারেন, তিনি জিপিএ-৫ পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, রাজশাহী বোর্ডের সেরা সাতে জায়গা করে নিয়ে তাক লাগিয়ে দেন শামীম।
যা হোক, অদম্য শামীম চাকরিতে যোগদানের পর কোরবানি ঈদ পেলেও রোজার ঈদ পেলেন এবারই প্রথম। তাই শামীমের কাছে এটা বিশেষ ঈদ। শামীম জানালেন, ‘এই ঈদ যেন আমার কাছে একটি আশীর্বাদ। সবকিছুকে ছাপিয়ে এ যেন অন্য রকম ঈদ আমার জীবনে। ঈদ মানে খুশি, তবে সে খুশি সবার জন্য একই রকম নাও হতে পারে। পৃথিবী বিষয়ে জ্ঞান হওয়ার পর থেকে আমি এই রকম ইদ কখনো কল্পনা করতেও সাহস হয়নি। এখন সেই সাহস করতে পারি। এই সাহস আমার ঈদের আনন্দ দ্বিগুণ করেছে। মা-বাবা, আত্মীয়স্বজনের ঈদ উপহার পৌঁছে দিতে পারি, এ যেন পৃথিবীতে এক স্বর্গীয় সুখ। তা ছাড়া মা-বাবা গর্ব করে বলতে পারেন, তাঁদের সন্তান একজন সৎ-নিষ্ঠাবান সরকারি কর্মকর্তা। পৃথিবীতে সকল মা-বাবা ভালো থাকুক, ভালো থাকুক তাদের সন্তান। বেকারত্বমুক্ত হোক পৃথিবীর সকল পরিশ্রমী।’
আমার সফলতায় হাসতে দেখেছি তাদের, তেমনই ব্যর্থতায় দেখেছি কাঁদতে। এখন প্রতিটি দিনই ঈদ নেমে আসে আমাদের ছোট্ট আঙিনায়। সবাইকে জানাই ঈদ মোবারক।