‘ছেলেপক্ষ দেখতে এসেছিল’

প্রতিমা লোহার, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার।
ছবি: সৌরভ দাশ

উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হতে পেরেই প্রতিমা লোহারের মনে হয়েছিল, স্বপ্ন পূরণ হয়ে গেছে। চা–শ্রমিকের সন্তান, কলেজে পড়বেন, এ স্বপ্ন দেখতেই তাঁকে যথেষ্ট সাহস সঞ্চয় করতে হয়েছে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ইচ্ছা তো রীতিমতো দুঃসাহস। কলেজে যাওয়া-আসার ভাড়া জোগাতে কষ্ট হতো বলে প্রতিদিন ক্লাস করতে পারেননি। তবু অনেক কষ্টে এইচএসসি পেরিয়েছেন। কিন্তু এরপরই শুরু হয় বিয়ের জন্য চাপ। প্রতিমা বলেন, ‘একদিন ছেলেপক্ষ বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আমাকে দেখতে আসে। সেই সময়টা ছিল সবচেয়ে কঠিন। পরিবারের ইচ্ছা ছিল শ্বশুরবাড়িতে থেকে পড়াশোনা করব। কিন্তু আমি রাজি ছিলাম না। একরকম লড়াই করে এইউডব্লিউতে ভর্তি হয়েছি।’ প্রবল ইচ্ছাশক্তিই নানা বাধা পেরিয়ে প্রতিমাকে এতদূর আসতে সাহায্য করেছে। পড়ালেখা করে নিজের অবস্থান দৃঢ় করতে চান তিনি।

উল্লেখ্য, দরিদ্রতম পরিবারের প্রথম মেয়েসন্তান, যাঁরা নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পৌঁছান, তাঁদের অনুপ্রাণিত করতে দেওয়া হয় আইডিএলসি ও প্রথম আলো ট্রাস্টের অদ্বিতীয়া বৃত্তি। চট্টগ্রাম অবস্থিত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এইউডব্লিউ) শিক্ষার্থীদের এই বৃত্তি দেওয়া হয়। ট্রান্সকম গ্রুপের সহযোগিতায় ৪২ জন এবং আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের সহযোগিতায় ৫৬ জনসহ মোট ৯৮ জন এই বৃত্তি পেয়েছেন। ২০২২ সালে বৃত্তিপ্রাপ্ত ১০ জন অদ্বিতীয়ার মধ্যে অন্যতম প্রতিমা লোহার।