‘আমি মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে পারব’

পরিবারের প্রথম নারী, যিনি দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছেছেন, তাঁদের অনুপ্রাণিত করতে দেওয়া হয় আইডিএলসি ও প্রথম আলো ট্রাস্টের অদ্বিতীয়া বৃত্তি। চট্টগ্রাম অবস্থিত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এইউডব্লিউ) শিক্ষার্থীরা পান এই ‍বৃত্তি। আবাসন, টিউশন ফি মওকুফসহ তাঁদের নানা সুবিধা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ট্রান্সকম গ্রুপের সহযোগিতায় ৪২ এবং আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের সহযোগিতায় ৪৬ জনসহ মোট ৮৮ জন ২০২১ সাল পর্যন্ত এই বৃত্তি পেয়েছেন। আজকে থাকছে ২০২১ সালে বৃত্তিপ্রাপ্ত সোমাশ্রী চাকমার গল্প।

২০২১ সালে অদ্বিতীয়া বৃত্তিপ্রাপ্ত সোমাশ্রী চাকমা।

পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি জেলার মেয়ে সোমাশ্রী চাকমা। অনেক বাধা অতিক্রম করে আজ স্নাতক পর্যায়ে এসেছেন তিনি। পরিবারের প্রথম মেয়ে হিসেবে স্নাতক পড়ছেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে। তাঁর এই এগিয়ে চলার গল্প শোনা যাক তাঁর নিজের মুখ থেকেই।

সোমাশ্রী চাকমার ভাষায়, ‘আমাদের তিনজনের পরিবার। মা, বড় ভাই, আর আমি। ৮ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছি। স্ট্রোকের পর প্রায় ২২ মাস পক্ষাগ্রস্ত থেকে বাবা আমাদের ছেড়ে গিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। তাঁর পেনশনের টাকায় মা কীভাবে সংসার সামলেছেন, জানি না। আমার জানা মতে, টাকার অঙ্কটা মাসে ৬ হাজারের মতো। বাবা মারা যাওয়ার আগে আমার ভাইকে শ্রীলংকা পাঠাতে পেরেছিলেন। বৃত্তিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছিল বলে তাকে কোনো টাকা পাঠাতে হয়নি। কিন্তু আমার পড়ালেখার খরচ জোগাতে মাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। এখন মা একটু নিশ্চিন্ত। ছেলে মেয়ের পড়ালেখার খরচ নিয়ে তাঁকে আর ভাবতে হবে না। ধন্যবাদ প্রথম আলো ও আইডিএলসিকে। এই বৃত্তির টাকা জমিয়ে আমি মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে পারব।’