মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কোর্স করার সুযোগ পেলেন শ্রীমঙ্গলের ভাড়াউড়া চা-বাগানের মেয়ে প্রিয়াংকা গোয়ালা। তিনি এখানে অ্যাসপায়ার লিডারশিপ প্রোগ্রামের আওতায় অনলাইন প্রশিক্ষণ কোর্স করবেন।
অ্যাসপায়ার ইনস্টিটিউট লিডারশিপ প্রোগ্রাম হলো হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ, যেটা পিছিয়ে থাকা সম্প্রদায়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বের গুণাবলি, মানসিকতা, এবং নেটওয়ার্ক তৈরি করতে সহায়তা করে। এর লক্ষ্য হলো মেধা এবং সুযোগের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে অংশগ্রহণকারীদের তাদের একাডেমিক, পেশাগত এবং ব্যক্তিগত জীবনে সাফল্য অর্জনের জন্য প্রস্তুত করা।
আসছে ৮ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে ক্লাস শুরু হবে। সারা বিশ্ব থেকে একদল মেধাবী শিক্ষার্থীর এন্টার এই অনলাইন ক্লাসে যোগ দেবে। কোর্সের মেয়াদ ৬ মাস। ইন্টারেকটিভ লিডারশিপ ডেভেলপমেন্টের নানা বিষয়ে পাঠদান করা হবে এতে। পরে সনদ প্রদান করবে প্রতিষ্ঠানটি।
এই খুশির বিষয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করেছেন তিনি। প্রিয়াংকা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি আজ খুবই রোমাঞ্চিত যে আমি হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি আয়োজিত অ্যাস্পায়ার লিডারশিপ প্রোগ্রামের জন্য নির্বাচিত হয়েছি! সারা বিশ্বের উচ্চাকাঙ্ক্ষী নেতাদের সঙ্গে বেড়ে ওঠার, শেখার এবং সংযোগ করার এটি একটি অবিশ্বাস্য সুযোগ। আমি এই রূপান্তরমূলক নেতৃত্বের যাত্রা শুরু করতে খুব উত্তেজিত, শিগগিরই শুরু হচ্ছে! শুরু, চ্যালেঞ্জ, এবং অর্জন!’
উল্লেখ্য, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভাড়াউড়া চা-বাগানের মেয়ে প্রিয়াংকা গোয়ালা। পরিবারের আর্থিক অসচ্ছলতা তাঁর পড়াশোনায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। আত্মীয়স্বজনের কথা শুনে মা-বাবা বিয়ে দিতে রাজি হয়। কিন্তু প্রিয়াংকা রাজি হয়নি। বিরুদ্ধে এগিয়ে গিয়ে বিয়ে ভেঙে দিয়েছেন। এই কারণে পুরো পরিবারকে ওরা বাড়ির চারপাশে পেট্রল ছিটিয়ে পুড়িয়ে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। তারপরও থেকে থাকেননি প্রিয়াংকা, পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন। নিজের ও তাঁর মায়ের চেষ্টায় স্নাতক পর্যন্ত যেতে পেরেছেন। তিনি ২০২০ সালে আইডিএলসি-প্রথম আলো ট্রাস্টের ‘অদ্বিতীয়া’ শিক্ষাবৃত্তি পান। শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে চট্টগ্রামের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এইউডব্লিউ) জনস্বাস্থ্য বিভাগে শেষ বর্ষে পড়াশোনা করছেন তিনি। সম্প্রতি ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিং, বাংলাদেশ থেকে ইন্টার্নশীপ শেষ করেছেন।
মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব নিয়ে গবেষণা করছেন তিনি। স্বপ্ন দেখেন দেশের বাইরে যাবেন, উচ্চশিক্ষা নিয়ে গবেষণা করবেন। সেই চেষ্টায় এগিয়েও যাচ্ছেন।