স্বাস্থ্যের ওপর পরিবেশের প্রভাব নিয়ে গবেষণার ইচ্ছা সোহানার

আইডিএলসি-প্রথম আলো ট্রাস্টের অদ্বিতীয়া শিক্ষাবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী সোহানা আক্তার।

নওগাঁর মান্দা থানায় দুর্গাপুর গ্রামের মেয়ে সোহানা আক্তার। তিনি ২০১৯ সালে আইডিএলসি-প্রথম আলো ট্রাস্টের অদ্বিতীয়া শিক্ষাবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রামের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এইউডব্লিউ) জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি যখন মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী ছিলেন, তখন নিজের বাল্যবিয়ে তিনি ঠেকিয়েছেন। কারণ তিনি পড়াশোনাটা করতে চান।

নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকানোর বিষয়ে সোহানা বলেন, ‘নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় বিয়ে প্রায় হয়েই গেছিল। গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ শিক্ষিত না। আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা তাঁকে বিয়ে দিতে বলেন। বলে যে, এত পড়াশোনা করিয়ে কি হবে-গরুর গোবর তো ফেলতেই হবে! এমন অবস্থায় বাবাও রাজি হয়ে গেছিল। তবে তাঁর মা তখন রাজি হয়নি। পড়াশোনায় ভালো ছিলাম আমি। এদিকে মায়ের বিয়েও হয়েছিল ১৩ বছর বয়সে। তাই মা চাননি তার মতো তাঁর মেয়েরও এই অবস্থা হোক। তা ছাড়া আমিও সবার বিরুদ্ধে গিয়ে আমার নিজের বিয়ে ঠেকিয়েছি।

সোহানা তাঁর পরিবারের তো বটেই, গ্রামের প্রথম মেয়ে যিনি স্নাতক পর্যায়ে যেতে পেরেছেন। সোহানা ধারণা করেন, নওগাঁর মান্দা থানায় প্রথম কোনো নারী আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পেরেছেন, সেটা তিনি।

সোহানা জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয় নিয়ে ডাবল মেজর করছেন। তিনি বলেন, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ,একটা আরেকটার সঙ্গে জড়িত। পরিবেশের বিভিন্ন ইস্যুগুলো কীভাবে স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে সেটা নিয়ে গবেষণা করতে চাই। সেই স্বপ্ন নিয়েই এগোচ্ছি। তা ছাড়া আমি যে এলাকা থেকে এসেছি, ওখানে বেশির ভাগ মানুষ অসচ্ছল ও অশিক্ষিত। গ্রামের মা ও মেয়েদের শিক্ষার বিষয়ে সচেতন করা, যাতে করে কোনো বল্যবিয়ের শিকার না হয়।’