জেমিই তাঁর পরিবারে স্নাতক সম্পন্নকারী প্রথম নারী

আইডিএলসি-প্রথম আলো ট্রাস্টের ‘অদ্বিতীয়া’ বৃত্তি পেয়ে এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেন জেমি নাহার।

জেমি নাহার, তাঁর পরিবারের প্রথম নারী যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। আইডিএলসি-প্রথম আলো ট্রাস্টের ‘অদ্বিতীয়া’ বৃত্তি পেয়ে এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেন। জেমির মা তাঁর শিক্ষায় সব সময় উৎসাহ দিয়েছেন, এবং তিনি এখন শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে স্নাতকোত্তর পড়ছেন।

জেমির বাবা একজন সাধারণ সৈনিক ছিলেন, ২০১৭ সালে অবসরে যান। তাঁর বাবার একার আয়ে তিন ভাইবোনের পড়াশোনা কঠিন ছিল। তিন ভাইবোনের মধ্যে জেমি নাহার বড়। ছোট বোন অনার্স প্রথমবর্, ছোট ভাই ক্লাস সেভেনে পড়ছে।

জেমি তাঁর এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানান, ‘বাবা সাধারণ সৈনিক ছিলেন। সে জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় থাকতে হয়েছে। আমার এগিয়ে যাওয়ার পেছনে মা সব করেছেন। আমার মায়ের ছোটবেলায় বিয়ে হয়ে যাওয়ায় পড়াশোনা তেমন করতে পারেনি। মা চাইতেন আমি যেন ভালোভাবে পড়াশোনা করে বড় কিছু হই। আমিও মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে চেয়েছি। পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছি। এসএসসি পাস করে এইচএসসি পড়েছি জয়পুরহাটে। মফস্বলে ভালো শিক্ষক পাইনি, তাই অনেকটা পিছিয়ে পড়েছিলাম আমি।’

মায়ের অনুভূতি কেমন জানতে চাইলে জানান, এখনো অনেক পথ বাকি। তারপরও মা অনেক খুশি। অনেকেই বলেছে, জয়পুরহাট থেকে চট্টগ্রাম গিয়ে এই মেয়ে পারবে না। কিন্তু মা সব সময় সাপোর্ট করেছে, বলছে—ও পারবে। বাবাও খুশি। এখন এইউডব্লিউতেই স্নাতকোত্তর পড়ছি। মা এখনো সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছেন ঠিক আগের মতোই। আর আমিও ধীরে ধীরে স্বপ্নপূরণের পথে এগোচ্ছি। ধন্যবাদ আমার পাশে থাকার জন্য।

উল্লেখ্য, নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ২০১২ সাল থেকে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এবং প্রথম আলো ‘ফার্স্ট ফিমেল ইন দা ফ্যামিলি স্কলারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ নামে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান শুরু করে। প্রতিবছর পরিবারের প্রথম নারী অথচ অসচ্ছল, যিনি উচ্চতর শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সমাজ গঠনে আগ্রহী, এ রকম ১০ জনকে ট্রান্সকম গ্রুপের সহায়তায় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে এ শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া শুরু করে প্রথম আলো ট্রাস্ট। ট্রান্সকমের সহায়তায় ২০১৬ সাল পর্যন্ত ৪২ জন শিক্ষার্থী এই বৃত্তি পেয়েছেন।

 ২০১৭ সাল থেকে আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেড এই শিক্ষাবৃত্তির দায়িত্ব নেয়। নতুনভাবে নামকরণ করা হয় ‘অদ্বিতীয়া’ নামে। আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের সহায়তায় ৫৬ জনসহ ২০২৩ পর্যন্ত মোট ১০৮ জন শিক্ষার্থী এই বৃত্তি পেয়েছেন। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনও তাঁদের আবাসন, টিউশন ফি সুবিধাসহ নানা সুযোগ দেয়।