জয়পুরহাট জেলার ধলাহার ইউনিয়নের দড়িপাড়া গ্রামের মেয়ে জেমি নাহার। জেমির বাবা একজন সাধারণ সৈনিক ছিলেন। ২০১৭ সালে অবসরে যান। তাঁর বাবার একার আয়ে সংসার চালিয় তিন ভাইবোনের পড়াশোনা করানো কঠিন ছিল। এদিকে তিন ভাইবোনের মধ্যে জেমি নাহার বড়। ছোট বোন এখন অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ ও ছোট ভাই অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছে। পরিবারে অভাব থাকলেও জেমির মা পড়াশোনার জন্য সব সময় উৎসাহ দিতেন। আর জেমির আগ্রহ ও চেষ্টা তো ছিলই।
জেমি তাঁর পরিবারের প্রথম নারী, যিনি স্নাতক পর্যন্ত যেতে পেরেছেন। জেমি ২০১৮ সালে আইডিএলসি-প্রথম আলো ট্রাস্টের ‘অদ্বিতীয়া’ শিক্ষাবৃত্তি পান। শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে চট্টগ্রামের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এইউডব্লিউ) অর্থনীতি বিভাগ থেকে সম্প্রতি স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। এখন স্নাতকোত্তর পড়ছেন। স্বপ্ন দেখে শিক্ষক হবেন। সেই চেষ্টায় এগিয়ে যাচ্ছেন। পরিবারে প্রথম স্নাতক অর্জনকারী প্রথম নারী জেমি।
এইউডব্লিউ’তে যাওয়ার বিষয়ে জেমি জানান, ‘আমার মা পিকেএসএফের সদস্য ছিলেন। এইউডব্লিউ পিকেএসএফকে কিছু সুবিধা দেয়। এটা আমার মার মাধ্যমে জানতে পারি। পরে আবেদন করি। এইউডব্লিউতে ইংরেজি ও গণিতে ওপর পরীক্ষা হয়। গণিতে আমি ভালো ছিলাম। সমস্যা ছিল ইংরেজি নিয়ে। পরীক্ষার আগে কিছু সময় পেয়েছিলাম। ওই সময়টাতে ভালো করে ইংরেজির ওপর প্রস্তুতি নিই। এভাবে ইংরেজিতে ভালো করি। পরীক্ষাও ভালো হয়। আমি ভর্তির সুযোগ পাই।’
নিজের স্বপ্নের কথাও জানালেন জেমি। তিনি বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই শিক্ষক হতে চাইতাম। এইউডব্লিউতে গিয়ে এই ইচ্ছাটা আরও বেড়েছে। কারণে এখানে শিক্ষার পরিবেশ, পড়ানোর ধরন অনেক উন্নত এবং আলাদা। পড়াশোনার পাশাপাশি অনেক ধরনের এক্সট্রা-কারিকুলার অ্যাকটিভিটিস শেখানো হয়। এই পরিবেশটা আমি বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে চাই। আমি মনে করি, শিক্ষকতায় পেশায় নতুন কিছু শেখাতে পারব।’