কে বলে শুধু ছেলেরাই মা-বাবার দায়িত্ব নিতে পারে?

তিলোতমা রজক, সিলেটG
ছবি: সৌরভ দাশ

‘আমি কালিটি চা–বাগানের সন্তান। যেখানে বড় হয়েছি, সেখানে মেয়েদের পড়ালেখা তো দূরে থাক, অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দেওয়াই নিয়ম। এখানে সবার ধারণা, ছেলেরাই মা-বাবাকে সারা জীবন দেখবে। একটা মেয়েও যে মা-বাবার দায়িত্ব নিতে পারে, তাঁরা জানেন না। আমি এটা প্রমাণ করব,’ কথাগুলো তিলোতমা রজকের। তিনি এখন এইউডব্লিউতে পড়েন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়ে তিলোতমা খুশি হলেও আশপাশের মানুষ খুশি হতে পারেননি। সবাই বলেছেন, মেয়েমানুষ, এত পড়াশোনা করিয়ে কী লাভ? শেষ পর্যন্ত পরের বাড়িতে সংসার করে খেতে হবে। এসব কথায় কান দেয়নি তাঁর পরিবার। অদ্বিতীয়া শিক্ষাবৃত্তি পাওয়া তিলোতমা জানান, তাঁর জীবনের লক্ষ্য এখন দুটি—মা, বাবা ও পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া এবং তাঁর সম্প্রদায়ের মেয়েদের জন্য কাজ করা।

দরিদ্রতম পরিবারের প্রথম মেয়েসন্তান, যাঁরা নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পৌঁছান, তাঁদের অনুপ্রাণিত করতে দেওয়া হয় আইডিএলসি ও প্রথম আলো ট্রাস্টের অদ্বিতীয়া বৃত্তি। চট্টগ্রাম অবস্থিত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এইউডব্লিউ) শিক্ষার্থীদের এই বৃত্তি দেওয়া হয়। তাঁদের আবাসন, টিউশন ফি মওকুফসহ নানা সুবিধা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এখন পর্যন্ত ট্রান্সকম গ্রুপের সহযোগিতায় ৪২ জন এবং আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের সহযোগিতায় ৫৬ জনসহ মোট ৯৮ জন এই বৃত্তি পেয়েছেন। ২০২২ সালে বৃত্তিপ্রাপ্ত ১০ জন অদ্বিতীয়ার মধ্যে অন্যতম ইসমা আক্তার। পরিবারের প্রথম মেয়ে হিসেবে স্নাতক পড়ছেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে।