‘বাগানের প্রত্যেকটা মেয়ে যেন ‘লিপি’ হতে পারে’

পরিবারের প্রথম নারী, যিনি দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছেছেন, তাঁদের অনুপ্রাণিত করতে দেওয়া হয় আইডিএলসি ও প্রথম আলো ট্রাস্টের অদ্বিতীয়া বৃত্তি। চট্টগ্রাম অবস্থিত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এইউডব্লিউ) শিক্ষার্থীরা পান এই ‍বৃত্তি। আবাসন, টিউশন ফি মওকুফসহ তাঁদের নানা সুবিধা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ট্রান্সকম গ্রুপের সহযোগিতায় ৪২ এবং আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের সহযোগিতায় ৪৬ জনসহ ২০২১ সাল পর্যন্ত মোট ৮৮ জন এই বৃত্তি পেয়েছেন। আজকে থাকছে এ বছর বৃত্তিপ্রাপ্ত লিপি শীলের গল্প।

অদ্বিতীয়া শিক্ষাবৃত্তি প্রাপ্ত চা বাগানের লিপি শীল।

শ্রীমঙ্গল উপজেলার চা বাগানের মেয়ে লিপি শীল। অনেক বাধা অতিক্রম করে আজ স্নাতক পর্যায়ে এসেছেন লিপি। পরিবারের প্রথম মেয়ে হিসেবে স্নাতক পড়ছেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে। তাঁর এই এগিয়ে চলার গল্প শোনা যাক তাঁর নিজের মুখ থেকেই।

লিপি জানান, ‘আমি চা বাগানের মেয়ে। বাগানের নাম টিপরাছড়া। এই ছোট্ট বাগানে আমিই প্রথম মেয়ে, যে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেয়েছি। এখানে প্রায় সবাই চা-বাগানের ১৭০টাকা মজুরিতে সংসার চালায়। আমাদের তা-ও নেই। বাবা বাগানে একটা মুদির দোকান দিয়েছিলেন, এটাই সম্বল। বাবা অসুস্থ হওয়ার পর ভাইয়া তার পড়াশোনার পাশাপাশি দোকানের হাল ধরেছে। তবু সংসার চালাতে খুব কষ্ট হতো। ভাগ্যিস, আমি কলেজ থেকে উপবৃত্তি পেয়েছিলাম। উপবৃত্তির টাকায় সেলাই মেশিন কিনেছি। বাগানের মানুষের জামা সেলাই করে যা আয় হতো, সেটা দিয়ে কলেজের পড়ালেখার খরচ মিটিয়েছি। এখন আমার স্বপ্ন, আমাদের বাগানের প্রত্যেকটা মেয়ে যেন ‘লিপি’ হতে পারে, সবাই যেন উচ্চশিক্ষার সুযোগ পায়। আমি সে লক্ষ্যে কাজ করব।’