অদ্বিতীয়া বৃত্তি
‘ষষ্ঠ থেকে এইচএসসি পর্যন্ত টিউশনি করেই লেখাপড়ার খরচ চালিয়েছি’
পরিবারের প্রথম নারী, যিনি দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছেছেন, তাঁদের অনুপ্রাণিত করতে দেওয়া হয় আইডিএলসি ও প্রথম আলো ট্রাস্টের অদ্বিতীয়া বৃত্তি। চট্টগ্রাম অবস্থিত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এইউডব্লিউ) শিক্ষার্থীরা পান এই বৃত্তি। আবাসন, টিউশন ফি মওকুফসহ তাঁদের নানা সুবিধা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ট্রান্সকম গ্রুপের সহযোগিতায় ৪২ এবং আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের সহযোগিতায় ৫৬ জনসহ মোট ৯৮ জন ২০২২ পর্যন্ত এই বৃত্তি পেয়েছেন। আজকে থাকছে ২০২১ সালে বৃত্তিপ্রাপ্ত আঁখি আসমার গল্প।
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার মেয়ে আঁখি আসমা তাঁর জীবনের গল্প জানালেন। অনেক বাধা অতিক্রম করে আজ স্নাতক পর্যায়ে এসেছেন। পরিবারের প্রথম মেয়ে হিসেবে স্নাতক পড়ছেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে। তাঁর এই এগিয়ে চলার গল্প শোনা যাক তাঁর নিজের মুখ থেকেই।
আঁখি আসমার ভাষায়, ‘আমার বাবা একজন সিএনজি চালক এবং আমার মা একজন গৃহিণী। আমরা ৫ ভাইবোনের মধ্যে ৪ জনই পড়াশোনা করে। আমার বাবা আমার পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি। আমার এক ভাইয়ের চিকিৎসা ও ঘর মেরামত করার জন্য কিছু ঋণও রয়েছে বাবার। তাই সংসার চালিয়ে ঋণের কিস্তি প্রদান, ভাইবোনের লেখাপড়ার খরচ বহন করা তাঁর একার জন্য খুবই কঠিন। তা ছাড়া মেয়ে হিসেবে আমারও কিছু খরচ আছে, যা তিনি দিতে পারেন না। আমি বুঝতে পারতাম, বাবার অনেক কষ্ট হচ্ছে। সে জন্য ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে এইচএসসি পর্যন্ত টিউশনি করেই আমার লেখাপড়ার খরচ চালিয়েছি। এমন পরিস্থিতিতে আইডিএলসি ও প্রথম আলো ট্রাস্টের অদ্বিতীয়া শিক্ষাবৃত্তি আমাকে দারুণভাবে সাহায্য করেছে। এ জন্য তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে একজন শিক্ষক হতে চাই। আমার ইচ্ছা, একজন আদর্শ শিক্ষক হয়ে আমার গ্রামের কলেজে পড়াব এবং গ্রামের মেয়েদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণে উৎসাহিত করব।’