গার্মেন্টে ১৭ মাস চাকরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসমা

ইসমা আক্তার, সাদুল্ল্যাপুর, গাইবান্ধাল।
ছবি: সৌরভ দাশ

গাইবান্ধার সাদুল্ল্যাপুর উপজেলার মেয়ে ইসমা আক্তর। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত আসা তাঁর জন্য সহজ ছিল না। এই দিন দেখার জন্য রিকশাচালক বাবা আর গৃহকর্মী মাকে কত কষ্টই না করতে হয়েছে! ইসমা বলেন, ‘অন্যের বাসায় কাজ করে আমাদের পড়াশোনা করিয়েছেন আমার মা। যাঁর বাসায় কাজ করতেন, তিনি অনেক সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু এইচএসসি পরীক্ষার পর বড় সংকটে পড়ে আমার পরিবার। বাবার পক্ষে রিকশা চালিয়ে পরিবারের ব্যয় বহন করা কঠিন হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে আমি গার্মেন্টে চাকরি শুরু করি। প্রায় ১৭ মাস চাকরি করেছি। কিন্তু মা যে বাসায় কাজ করেন, সেই বাসার নানু সব সময় আমাকে আরও পড়ানোর কথা বলতেন। তাঁর উৎসাহেই মা-বাবা রাজি হন। নানুর পরামর্শে আমি এইউডব্লিউর খোঁজখবর নিই। পরীক্ষা দিয়ে টিকে যাই। আমার পরিবারের আমিই স্নাতক পড়া প্রথম মেয়ে। এই অনুভূতি অন্যরকম।’

দরিদ্রতম পরিবারের প্রথম মেয়েসন্তান, যাঁরা নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পৌঁছান, তাঁদের অনুপ্রাণিত করতে দেওয়া হয় আইডিএলসি ও প্রথম আলো ট্রাস্টের অদ্বিতীয়া বৃত্তি। চট্টগ্রাম অবস্থিত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এইউডব্লিউ) শিক্ষার্থীদের এই বৃত্তি দেওয়া হয়। তাঁদের আবাসন, টিউশন ফি মওকুফসহ নানা সুবিধা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এখন পর্যন্ত ট্রান্সকম গ্রুপের সহযোগিতায় ৪২ জন এবং আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের সহযোগিতায় ৫৬ জনসহ মোট ৯৮ জন এই বৃত্তি পেয়েছেন। ২০২২ সালে বৃত্তিপ্রাপ্ত ১০ জন অদ্বিতীয়ার মধ্যে অন্যতম ইসমা আক্তার। পরিবারের প্রথম মেয়ে হিসেবে স্নাতক পড়ছেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে।