সেলাইয়ের কাজ করে পড়াশোনা করতে হয়েছে ঈশিতাকে
পরিবারের প্রথম নারী, যিনি দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছেছেন, তাঁদের অনুপ্রাণিত করতে দেওয়া হয় আইডিএলসি ও প্রথম আলো ট্রাস্টের অদ্বিতীয়া বৃত্তি। চট্টগ্রাম অবস্থিত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এইউডব্লিউ) শিক্ষার্থীরা পান এই বৃত্তি। আবাসন, টিউশন ফি মওকুফসহ তাঁদের নানা সুবিধা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের সহযোগিতায় ৬৬ জনসহ মোট ১০৮ জন এখন পর্যন্ত এই বৃত্তি পেয়েছেন। পড়ুন `অদ্বিতীয়া' বৃত্তিপ্রাপ্ত ঈশিতা গোয়ালার গল্প।
চা-বাগানের মেয়ে ঈশিতা জানান, ‘মৌলভীবাজারের ছোট্ট কেজুরীছড়া চা–বাগান থেকে আমার উঠে আসা। বাবার ১২০ টাকা মজুরিতে মা-বাবা-দাদি-দুই ছোট বোন, ভাইকে নিয়ে আমাদের সাতজনের সংসার চলেছে। আপনারা জানেন, কিছুদিন আগে মজুরি বেড়ে ১৭০ টাকা হয়েছে। অথচ আমার কলেজে যাওয়া-আসার খরচই ছিল ১০০ টাকা। বাবার স্বল্প আয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না। আমি তাই সেলাইয়ের কাজ শিখেছি। কলেজে পড়ার সময় সেলাইয়ের কাজ করে যা আয় হতো, তা দিয়েই চলত। তবু প্রতিদিন কলেজে যাওয়া হতো না। এইউডব্লিউতে পড়ার সুযোগ পেয়ে বাবাকে কিছুটা হলেও নির্ভার করতে পেরেছি। একই সাথে অদ্বিতীয়া শিক্ষাবৃত্তি দেওয়ার কারণে আমার পারিবারের জন্য অনেক সুবিধা হয়েছে। আমার নিজের খরচ নিয়ে পারিবারকে আর ভাবতে হয় না। আমিও পড়ালেখায় পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারছি। এ জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই।’
ঈশিতা গোয়ালার ছোট দুই বোন এখনো পড়ালেখা করছে। ঈশিতার বৃত্তির ব্যবস্থা হওয়ায় বাবা তাঁর ছোট মেয়েদের খরচ দেওয়া কিছুটা সহজ হচ্ছে। চা-বাগানের গণ্ডি পেরিয়ে অনেক দূর যেতে চান ঈশিতা। সব বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাবেন ঈশিতারা— এটাই আমাদের কামনা।