বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেন, এটা বলার সাহসটাও ছিল না সিসিলিয়ার

অদ্বিতীয়ার শিক্ষাবৃত্তি পাওয়া মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার মেয়ে স্মৃতি সিসিলিয়া কেরকেটা।
ছবি: সৌরভ দাশ।

চা–শ্রমিকের সন্তান—এই পরিচয় নিয়ে গর্ব করেন স্মৃতি সিসিলিয়া কেরকেটা। যে পরিবেশে বড় হয়েছেন, সেখানে মেয়েদের শিক্ষার চল নেই বললেই চলে। তবু তিনি ভাগ্যবান, পড়ালেখার ক্ষেত্রে মা-বাবাকে পাশে পেয়েছেন সব সময়। সমর্থন থাকলে কী হবে, সামর্থ্য তাঁদের ছিল না। টাকার অভাবে উচ্চমাধ্যমিকের সব বইও কিনতে পারেননি। করোনাকালে স্মার্টফোনের অভাবে করতে পারেননি অনলাইন ক্লাস। এত বাধার পরও এইচএসসিতে পেয়েছেন জিপিএ ৪.৯২। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেন, এসব কথা বলার সাহসটাও তাঁর ছিল না। কিন্তু তিনি থেমে যাননি। নিজের চেষ্টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এইউডব্লিউতে ভর্তি পরীক্ষা দেন। এইউডব্লিউতে সুযোগ হয়ে যাওয়ার পর মনে সাহস পান।

স্মৃতি বলেন, ‘অদ্বিতীয়া বৃত্তিটা আমার খুব প্রয়োজন ছিল। এখন আমি অনেকটা নির্ভার। নিজের খরচ অন্তত চালাতে পারব। শুধু পড়ালেখায় মনোযোগ দিতে পারব।’

উল্লেখ্য, দরিদ্রতম পরিবারের প্রথম মেয়েসন্তান, যাঁরা নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পৌঁছান, তাঁদের অনুপ্রাণিত করতে দেওয়া হয় আইডিএলসি ও প্রথম আলো ট্রাস্টের অদ্বিতীয়া বৃত্তি। চট্টগ্রাম অবস্থিত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এইউডব্লিউ) শিক্ষার্থীদের এই বৃত্তি দেওয়া হয়। তাঁদের আবাসন, টিউশন ফি মওকুফসহ নানা সুবিধা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এখন পর্যন্ত ট্রান্সকম গ্রুপের সহযোগিতায় ৪২ জন এবং আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের সহযোগিতায় ৫৬ জনসহ মোট ৯৮ জন এই বৃত্তি পেয়েছেন। ২০২২ সালে বৃত্তিপ্রাপ্ত ১০ জন অদ্বিতীয়ার মধ্যে অন্যতম মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার মেয়ে স্মৃতি সিসিলিয়া কেরকেটা। পরিবারের প্রথম মেয়ে হিসেবে স্নাতক পড়ছেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে।