এগিয়ে চলার গল্প
‘এসএসসির আগে ভেবেছিলাম, পড়ালেখা ছাড়তে হবে’
দরিদ্রতম পরিবারের প্রথম মেয়েসন্তান, যাঁরা নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পৌঁছান, তাঁদের অনুপ্রাণিত করতে দেওয়া হয় আইডিএলসি ও প্রথম আলো ট্রাস্টের ‘অদ্বিতীয়া’ বৃত্তি। চট্টগ্রামে অবস্থিত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে (এইউডব্লিউ) পড়ার সুযোগ পান তাঁরা। আবাসন, টিউশন ফি মওকুফসহ নানা সুবিধা তাঁদের দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ২০১২ সাল থেকে ট্রান্সকম গ্রুপের সহযোগিতায় ৪২ জন এবং ২০১৭ সাল থেকে আইডিএলসি ফাইন্যান্স পিএলসির সহযোগিতায় ৭৬ জনসহ মোট ১১৮ জন এ পর্যন্ত এই বৃত্তি পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৬৫ জনের স্নাতক শেষ হয়েছে, যাঁদের মধ্যে অনেকেই দেশে-বিদেশে ভালো অবস্থানে আছেন। ২০২৪ সালেও বৃত্তি পেয়েছেন ১০ জন। পড়ুন তাঁদের মধ্যে কক্সবাজারের চকরিয়ার মেয়ে তমজিদা হাছিনের জীবনের অভিব্যক্তি, তাঁর এগিয়ে চলার গল্প।
২০১০ সালে ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য বাবা সৌদি আরব গিয়েছিলেন। কিন্তু পারকিনসন রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০১৫ সালে তিনি ফিরে আসেন। শুরু হয় আমাদের দুর্দিন। এখনো বাবা বিছানায় পড়ে আছেন। আবোলতাবোল বকেন। তাঁকে মুখে তুলে খাওয়াতে হয়। এসএসসি পরীক্ষার আগে দিয়ে হঠাৎ মা-ও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সে সময় সংসারের খরচ, পড়াশোনার খরচ মেটাতে কত যে কষ্ট হয়েছে। আমাদের কিছু জমি ছিল। চিকিৎসার খরচ জোগাতে সেসবেরও অনেকখানি বিক্রি করে দিতে হয়েছে। এসএসসি পরীক্ষার আগে তো ভেবেছিলাম, পড়ালেখাটাই ছেড়ে দিতে হবে। মামা আর বড় খালা কিছু টাকা দিয়েছিলেন, ওসব দিয়েই খরচ চালিয়েছি। এসএসসিতে ৪ দশমিক ৭২, আর এইচএসসিতে পেয়েছি জিপিএ–৫। ভেবেছিলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্নটা আর পূরণ হবে না। কিন্তু এইউডব্লিউর হাত ধরে সেই স্বপ্ন এখন পূরণ হয়েছে। এখন আমি আরও বড় স্বপ্নের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। অদ্বিতীয়া বৃত্তি আমার পড়ালেখার উপকরণ কিনতে সাহায্য করবে। নিজের খরচ জোগাতে মা-বাবার ওপর নির্ভর করতে হবে না, এটাই বড় প্রাপ্তি।