মাদকাসক্তির মতোই ভয়াবহ ইন্টারনেট–আসক্তি

প্রথম আলো ট্রাস্ট আয়োজিত মাদকবিরোধী পরামর্শ সহায়তা সভায় (বাঁ থেকে) ডা. রাহেনুল ইসলাম, ডা. ফারজানা রহমান ও ডা. সরদার আতিক। গতকাল ধানমন্ডির ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে।
প্রথম আলো

বিশ্বকে আমাদের হাতের মুঠোয় এনেছে ইন্টারনেট। কিন্তু ইন্টারনেটে আসক্তি কি আমাদের সমূহ পতনের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে? তারুণ্যের অপরিমেয় শক্তি কি ধ্বংস হচ্ছে? তীব্র ইন্টারনেট-আসক্তির কারণে আমরা কী ভয়াবহ আচরণগত ও মানসিক সমস্যায় ভুগছি?

গতকাল শনিবার প্রথম আলো ট্রাস্টের মাদকবিরোধী আন্দোলনের নিয়মিত কার্যক্রম মাদকবিরোধী পরামর্শ সহায়তা সভায় এসব প্রশ্ন উঠে আসে। বিজ্ঞ আলোচকেরা এসব প্রশ্নের উত্তর দেন।

রাজধানীর ধানমন্ডির ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে প্রথম আলো ট্রাস্ট আয়োজিত ১৬৫তম পরামর্শ সভায় অংশ নেন রাজধানীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

পরামর্শ সভার অন্যতম আলোচক কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের আবাসিক মনোবিদ (রেসিডেন্ট সাইক্রিয়াট্রিস্ট) ডা. রাহেনুল ইসলাম বলেন, ‘কেউ যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১২ ঘণ্টা ইন্টারনেটে ডুবে থাকে, তবে বুঝতে হবে সে ইন্টারনেটে আকণ্ঠ ডুবে আছে, যাকে বলে ইন্টারনেট–আসক্তি। এর ফলাফল মাদকাসক্তির মতো ভয়াবহ। ইন্টারনেট–আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে চাইলে প্রথমে আমাদের সচেতন হতে হবে। ইন্টারনেট–আসক্তির ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জানতে হবে। আর আমাদের শারীরিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে হবে। এর সব থেকে ভালো মাধ্যম প্রতিদিন এক থেকে দুই ঘণ্টা খেলাধুলায় যুক্ত থাকা।’

সভার অন্যতম আলোচক জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারজানা রহমান বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের খুব বেশি প্রয়োজন নেই। আমাদের এখানে সামাজিক বন্ধনের ঐতিহ্য রয়েছে। এর চর্চা বাড়াতে হবে। আমরা কখনো প্রযুক্তির দাস হতে পারি না। আমরা মানবিকতার জয়গান গাইব।’

ইন্টারনেটে আসক্ত হওয়ার কারণে তরুণেরা বাস্তবতা ভুলে যাচ্ছে—এমন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সরদার আতিক বলেন, ইন্টারনেটে যুক্ত হওয়াটা বর্তমানে খুব সহজ। ইন্টারনেট আসক্তির কারণে, মা–বাবাও তাঁদের সন্তানদের সময় কম দিচ্ছেন।

পরামর্শ সভাটি সঞ্চালনা করেন প্রথম আলো ট্রাস্টের সমন্বয়ক মাহবুবা সুলতানা।