সেলফ হেল্প গ্রুপ যেভাবে কাজ করে

দীর্ঘদিন মাদকবিরোধী নানা কর্মসূচি, মাদকবিরোধী পরামর্শ সহায়তা সভায় চিকিৎসক ও মনোবিজ্ঞানীদের পরামর্শ ও পর্যবেক্ষণ অনুসরণে লিখেছেন আশফাকুজ্জামান।

আমাদের দেশের মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা সেলফ হেল্প গ্রুপের মাধ্যমে সেবা নেয়। এখানে সাধারণত দুই ধরনের সভা হয়। একটি সবার জন্য উন্মুক্ত। অন্যটি শুধু মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের জন্য। নারকটিকস এনোনিমাসে মূলত কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করা হয়। কোনো অসুস্থ ব্যক্তি নিজেকে সুস্থ করার জন্য এ ধাপগুলো মেনে চলে। ধাপগুলোর মধ্যে রয়েছে, আসক্তিজনিত সমস্যাকে স্বীকার করা। সাহায্য প্রার্থনা করা। নিজেকে মূল্যায়ন করা। প্রতিটি সদস্যের ব্যক্তিগত তথ্যসহ সব বিষয়ে গোপনীয়তা রক্ষা করা। মাদক গ্রহণকালীন যে ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। অন্য মাদকাসক্ত, যারা সুস্থ হতে চায়, তাদের সহযোগিতা করার মাধ্যমে নিজে সুস্থ থাকা। যারা এ কাজে সম্পৃক্ত হতে চায়, তাদের সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার প্রতি আস্থা থাকতে হয়। এ জন্য এনএকে অনেকে আধ্যাত্মিক কাজ বলে থাকে।

এখানে তিনটি বিষয় খুব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। এগুলো হলো: সততা, স্বচ্ছতা ও সদিচ্ছা। তা ছাড়া এই পদ্ধতির মূলে কাজ করে একে অপরের প্রতি সহযোগিতার মনোভাব। এই পদ্ধতিতে কোনো পেশাজীবী, চিকিত্সক, কাউন্সিলিং, আবাসিক বন্দোবস্ত বা ক্লিনিকের ব্যবস্থা নেই। যারা দীর্ঘদিন ধরে মাদক থেকে সুস্থ আছে, তারা নিজেদের অভিজ্ঞতার আলোকে অসুস্থ মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের সাহায্য করেন। কোনো কোনো গ্রুপ বা দল আছে বর্ষপূর্তিসহ বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান করে থাকে।

মাদকাসক্তি একটি অসুস্থতা। অপ্রত্যাশিতভাবে বিভিন্ন কারণে যে কেউ মাদকাসক্ত হতে পারেন। চিকিত্সার ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যসহ সবাইকে এই অসুস্থতার বিশেষ বৈশিষ্ট্য গুরুত্বের সঙ্গে বুঝতে হবে। মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের একার পক্ষে এই অসুস্থতা থেকে বেরিয়ে আসা খুব কঠিন। সঠিক চিকিত্সা ও পুনর্বাসনের মাধ্যমে আক্রান্ত ব্যক্তিকে পুনরায় সুস্থ জীবনধারায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব। তাই পারিবারিক ও সামাজিকভাবে ঘৃণা বা অবহেলা না করে, এদের সুস্থ হওয়ার সুযোগ দিতে হবে।