‘মাদককে না বলার নৈতিক শক্তি ও সামাজিক দক্ষতা তৈরি করতে হবে’

প্রথম আলো ট্রাস্টের নিয়মিত আয়োজন মাদকবিরোধী পরামর্শ সহায়তা সভা। করোনাকালে এ সভা চলছে অনলাইনে। গত ১০ মে ২০২১ তারিখে প্রথম আলো ও প্রথম আলো ট্রাস্টের ফেসবুক পেজে মাদকবিরোধী অনলাইন পরামর্শ সহায়তা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল চারটা থেকে আধা ঘণ্টার এই আয়োজনে অনলাইন মাদকবিরোধী পরামর্শ দেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আহমেদ হেলাল । অনলাইন এই অনুষ্ঠানে যে বিষয়গুলো আলোচনায় আসে সেগুলো প্রশ্ন ও উত্তর আলোকে প্রকাশিত হচ্ছে। আজকে থাকছে পর্ব-১৯।

প্রশ্ন: শুরু থেকে মাদক ব্যবহারকারী যখন বুঝতে পারে সে ধীরে ধীরে মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে, এই সময়ে একজন ব্যক্তি নিজে কীভাবে সতর্ক হতে পারে?

উত্তর: আমরা বলি আসক্তির আগে প্রতিরোধ করা উচিত। তার জন্য বড় দাগে তিনটি কথা বলে থাকি। এক হলো, সাপ্লাই রিডাকশন অর্থাৎ মাদকের সহজলভ্যতা বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয় বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ, যার ওপরে আমরা বেশি জোর দিয়ে থাকি। সেটা হলো ডিমান্ড রিডাকশন যার অর্থ মাদকের সহজলভ্যতা বা মাদক থাকার পরও একজন তরুণের সেই মাদককে না বলার মানসিক শক্তি অর্জন করা। মাদকের সহজলভ্যতা থাকার পরেও মাদককে না বলার যে নৈতিক শক্তি বা না বলার যে দক্ষতা এবং এর জন্য তার যে সামাজিক দক্ষতা তৈরি করতে হবে সেটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই জায়গাটিতে আমরা অনেক সময় ব্যর্থ হয়ে পড়ি যে, একজন হয়তো মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ল, তার মানে বুঝতে হবে তার বিনোদনের অভাব আছে। মাদকের কাছে না আসার জন্য বিকল্প পথ তৈরি করতে হবে, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত রাখতে হবে।

তা ছাড়া বন্ধুদের মাধ্যমে যেমন অনেকে মাদকে আসক্ত হয়ে পরে তেমনই বন্ধুদেরকে যদি আমরা ইতিবাচকভাবে কাজে লাগাতে পারি তাহলে কিন্তু বন্ধুরাও তাকে মাদক থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করতে পারে। সবশেষে বলব, পরিবারের একটি বড় ভূমিকা আছে। অনেক পরিবারের সদস্যরা হয়তো বুঝতে পারেন যে, তার সন্তান মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে। কিন্তু তাঁরা বিষয়টিকে গুরুত্ব দেন না, তাঁরা মনে করেন এটি ঠিক হয়ে যাবে। এমন হলে পরিবারকে অবশ্যই একদম শুরু থেকেই সতর্ক হতে হবে।

আমরা বলে থাকি সিগারেট হলো যে কোনো আসক্তির প্রবেশদ্বার। অভিভাবক যদি দেখেন যে তাঁর সন্তান সিগারেটে আসক্ত হয়ে পরেছেন, তখনই তাদের সতর্ক হতে হবে।