সাফল্যের ধারা অব্যাহত রেখেছেন সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার অদম্য মেধাবী মোছা. নূপুর খাতুন। চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষায় উপজেলা সদর ধানগড়া মহিলা কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি।
মোছা. নূপুর খাতুন উপজেলার ধানগড়া এলাকার মো. আবদুল মান্নান ও মোছা. আফেলা খাতুন দম্পতির মেয়ে।
ছোটবেলায় বাবাকে হারান নূপুর। এরপর নিজের অদম্য আগ্রহ আর মায়ের আপ্রাণ চেষ্টায় তার পড়ালেখা চলতে থাকে।
এসএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে উপজেলা সদরের ধানঘরা উচ্চবিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় মোছা. নূপুর খাতুন। পরিবারের আর্থিক অসচ্ছলতা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি তাঁর পড়ালেখার প্রতি দারুণ আগ্রহের কাছে। অদম্য এ মেধাবীর সঙ্গে কথা বলে তাঁকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় প্রথম আলোতে।
এরপর তাঁর পারিবারিক অবস্থা ও পড়াশোনার প্রতি অদম্য আগ্রহের কথা বিবেচনায় ব্র্যাক ব্যাংক ও প্রথম আলো ট্রাস্টের ‘অপরাজেয় তারা’ শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়। ফলে পড়ালেখায় আর কোনো সমস্যা হয়নি তাঁর। এই বৃত্তির সহায়তায় উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে পড়ালেখার চালিয়েছেন। ভালো ফলাফল করে নিজের কথা রেখেছেন নূপুর খাতুন। সাফল্য ধরে রাখায় তাঁকে স্নাতক পর্যায়েও শিক্ষাবৃত্তি দেবে এই তহবিল।
মোছা. নূপুর খাতুন বলেন, ‘আমার মা আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছেন। আমার পড়ালেখার জন্য প্রথম আলো ট্রাস্ট পাশে দাঁড়িয়েছে। মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে চেষ্টা চালিয়ে যাব। ব্র্যাক ব্যাংক ও প্রথম আলো ট্রাস্টের বৃত্তি লাভ করে পড়ালেখা করেছি, আগামী দিনে অসহায় মানুষের জন্য কিছু করতে চাই।’
ছোটবেলায় প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি ধানগড়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এ বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় জিপিএ-৪-৮৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হন ধানঘরা উচ্চবিদ্যালয়ে।
মেয়ের এমন সফলতা দেখে আপ্লুত মা মোছা. আফেলা খাতুন। তিনি বলেন, আগামী দিনের পড়ালেখাতেও মেয়েটা যেন ভালো করে তার জন্য সবাই দোয়া করবেন।
উপজেলা সদর ধানগড়া মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মাসুদ রানা প্রথম আলো ট্রাস্টের প্রশংসা করে বলেন, আমাদের কলেজসহ বিভিন্ন এলাকার কলেজের অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পেয়ে পড়ালেখা করছে। তাদের অনেকে ভালো ফলাফল করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছেন। কেউ কেউ কর্মজীবনেও প্রবেশ করেছেন। অদম্য মেধাবীদের জন্য প্রথম আলো ট্রাস্টের এ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।