সেই সুমাইয়া এখন স্বপ্নপথে হাঁটছে

ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট ‘অপরাজেয় তারা’ শিক্ষাবৃত্তি পেয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন সুমাইয়া আক্তার সাথী।

মাত্র তিন শতক জমিতে টিনের ঘরে বেড়ে ওঠা। বাবার রঙের কাজের আয় দিয়ে কোনো রকমে চলে সংসার। সেই পরিবারেই জন্ম নেওয়া সুমাইয়া আক্তার সাথী বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বছরখানেক আগেও যার পড়াশোনার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত ছিল, সেই সুমাইয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক ও প্রথম আলো ট্রাস্টের ‘অপরাজেয় তারা’ শিক্ষাবৃত্তি প্রকল্প। এখন সে তাঁর স্বপ্নের পথে হাঁটছে আরও একধাপ এগিয়ে।

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার পাটোয়ারী পাড়া গ্রামের মেয়ে সুমাইয়া। ২০২৪ সালে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিল সে। কিন্তু তারপরই দুশ্চিন্তা পেয়ে বসে, কলেজে ভর্তি ও পড়ার খরচ কেমন করে চলবে? কারণ বাবা সাহেদ আলী রঙের কাজ করেন দিনমজুর হিসেবে। বাবার দিনমজুরির আয়ে পাঁচ সদস্য সংসারে খরচের সঙ্গে মেয়ের পড়ালেখা চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

বাবার সঙ্গে সুমাইয়া আক্তার সাথী।

তখন (গত বছরে ১১ জুন) প্রথম আলোতে সুমাইয়াকে নিয়ে প্রকাশিত হয় ‘খুশি মুহূর্তে খরচ নিয়ে যত চিন্তা’ শিরোনামে একটি মানবিক প্রতিবেদন। প্রতিবেদন দেখে প্রথম আলো ট্রাস্ট সুমাইয়ার দায়িত্ব নেয়। তার কলেজ ভর্তি, বই, পোশাক, যাতায়াত, টিউশন ফি—সবকিছুতেই আসে সহায়তার হাত।

সুমাইয়া এখন ডাঙ্গীরহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছেন। আগের সেই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মুখে এখন স্বপ্ন আর আত্মবিশ্বাসের আলো।

সুমাইয়া আক্তার সাথী বলেন, ‘আগে কলেজে ভর্তি হওয়া অনিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। এখন পড়ালেখা ঠিকমতো চালাতে পারছি। প্রথম আলো ট্রাস্ট ও ব্র্যাক ব্যাংক পাশে না থাকলে আমি হয়তো লেখাপড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হতাম। আমার স্বপ্ন এখন আরও দৃঢ়। আমি চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করতে চাই।’

তার বাবা সাহেদ আলী বলেন, ‘আগে ভাবতাম বেটির পড়ালেখা কেমন করে চালাম। এখন আল্লাহর রহমতে ও ভালো আছে। আমি গরিব মানুষ, কিছু দিতে পারি নাই, কিন্তু বেটিক নিয়ে গর্ব হয়।’

ডাঙ্গীরহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সুমাইয়ার মতো মেধাবী ছাত্রীদের পাশে দাঁড়ানো খুব জরুরি ছিল। প্রথম আলো ট্রাস্ট যেভাবে তাকে সহায়তা করছে, তাতে সে নিশ্চয়ই সমাজে বড় কিছু করবে।’