‘হারিকেনের আলোয় পড়তাম, কেরোসিনের অভাবে অনেক রাত অন্ধকারে বসে থাকতাম’

জয়ন্ত কোল সরেন

আমরা দুই ভাইবোন । বোনের বিয়ে হয়েছে। বাবা দিনমজুর । বাবার সঙ্গে কাজ করতে যেতাম। আমার পরিবারে এসএসসি পাস তো দূরের কথা স্কুলের গণ্ডিও কেউ পার হয়নি। সেই রকম পরিবার থেকে আজ আমি চাঁপাইনবাবগঞ্জে শাহ নেয়ামতুল্লাহ কলেজে ব্যবস্থাপনা বিভাগে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। আমাদের এলাকার মানুষ শিক্ষায় পিছিয়ে আছে। আমার স্বপ্ন শিক্ষকতা করব । মনে পড়ে আমাদের গ্রামে তখনো বিদ্যুতের আলো পৌঁছায়নি, হারিকেনের আলোয় রাতে পড়তাম। তেল ফুরিয়ে যেত। কেরোসিন তেলের অভাবে অনেক রাতে অন্ধকারে বসে থাকতাম। এই কথাগুলো বলছিলেন ক্ষুদ্র জাতিসত্তা কোল সম্প্রদায়ের সন্তান জয়ন্ত কোল সরেন।

তিনি বাবুডাইং আলোর পাঠশালার প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তাঁদের ব্যাচের এসএসসি পরীক্ষা পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে জয়ন্ত কোল সরেন স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থী।

জয়ন্ত কোল সরেন জানালেন ,আমি এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিলাম। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রবেশপত্রে ভুল ক্রমে মানবিক বিভাগের ছাত্র হয়ে গেলাম। পরীক্ষার আগে পড়াশোনা করব, না প্রবেশপত্রের ভুল ঠিক করব। এক পর্যায়ে বাবুডাইং আলোর পাঠশালার শিক্ষকেরা দায়িত্ব নিয়ে মানবিক বিভাগ থেকে বিজ্ঞান ঠিক করে দিলেন। তা না হলে কি যে হতো।

জয়ন্ত কোল সরেন

বাবুডাইং আলোর পাঠশালার প্রধান শিক্ষক আলীউজ্জামান নূর বলেন, জয়ন্ত কোল সরেন এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৩.১৮, এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৩.৮৮ পান।

বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকায় শিক্ষার আলো পৌঁছে দিচ্ছে প্রথম আলো ট্রাস্ট। সামিট গ্রুপের আর্থিক সহায়তায় প্রথম আলো বাবুডাইং আলোর পাঠশালাসহ ৬টি স্কুল পরিচালনা করছে।