বাল্যবিয়ে রোধে সহায়তা করছেন আলোর পাঠশালার শিক্ষকেরা
পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াকালীন সময় বাবুডাইং আলোর পাঠশালার এক শিক্ষার্থীর বিয়ে ঠিক হয়। বিয়ে উপলক্ষে বাড়িঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা করা হয়। পরিবারের কর্তা ব্যক্তি জানালেন বিয়ের কথা যেন কোনোভাবেই শিক্ষক জানতে না পারে। শিক্ষকদের জানালে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে। এরপর কয়েকদিন স্কুলে যায়নি ওই শিক্ষার্থী। স্কুলে ওই শিক্ষার্থীর অনুপস্থিতি দেখে শিক্ষক খোঁজ নিতে তাদের বাড়ি যান। বাড়ি গিয়ে শিক্ষক দেখতে পান বিয়ের প্রস্তুতি চলছে। বাবুডাইং গ্রামে মাঝে মাঝে এমন ঘটনা হয়ে থাকে। বাবুডাইং আলোর পাঠশালার সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিমা হাসদার জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা এটা। রিমা হাসদার মা বিবি মুরমু বলেন, ‘রিমার বাবা ঠিক মতন খাটে না। মাইয়্যা বড় হোইছে। আর গেরামে মাইয়্যা বড় হয়্যা গেলে নানা রুকুম সমস্যায় পড়তে হয়।’
বাবুডাইং আলোর পাঠশালার সহকারী শিক্ষক সোনিয়া খাতুন শশী একান্তে কথা বলেন রিমার সঙ্গে। রিমা হাসাদা জানায়, সে বাল্যবিয়ে করতে চায় না। পড়াশোনা করতে চায়। শিক্ষককে অনুরোধ করেন তার বিয়েটি বন্ধ করার জন্য। এ সময় শিক্ষকেরা তার বাবা-মাকে বুঝিয়ে বিয়ে বন্ধের প্রতিশ্রুতি নেন। প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকেরা নানা ভাবে বোঝাতে সক্ষম হন এবং ওই বিয়ে রোধ করেন।
রিমা হাসদার মতো নওগাঁর গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোসা. সুমনা খাতুনসহ অনেক শিক্ষার্থীর বাল্যবিয়ে ঠিক হয়। আলোর পাঠশালায় কর্মরত শিক্ষকদের চেষ্টায় ওই সব বিয়ে বন্ধ্ হয়। সেই সব শিক্ষার্থীরা এখন পড়াশোনা করছেন।
বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকায় যেখানে বহুদিন শিক্ষার আলো পৌঁছায়নি এ রকম অবহেলিত কয়েকটি এলাকায় শিক্ষার আলো পৌঁছে দিচ্ছে প্রথম আলো ট্রাস্ট। সামিট গ্রুপের আর্থিক সহায়তায় আলোর পাঠশালার ৬টি স্কুল পরিচালনা করছে।