দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী আসমা খাতুন। বাবার কাছ থেকে ১০ টাকা নিয়ে এসেছিল কিছু কিনে খাবার জন্যে। কিন্তু বিদ্যালয়ে এসে জানতে পারে, বন্যায় দুর্গতদের জন্য টাকা উত্তোলন করা হচ্ছে। তা শুনে, সেই টাকা আর খরচ না করে জমা দেয় বিদ্যালয়ে। এ ছোট্ট বয়সে অসহায় মানুষদের জন্য তার এ ভালোবাসা নজর কাড়ে সবার।
অন্যদিকে বয়স না হলেও নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসা চার বছর বয়সী রাধিকা মুরমুও হাতে করে নিয়ে আসে ১০টি টাকা। টাকা রাখার টেবিলে একটু লজ্জা নিয়ে রাখতে আসে টাকার নোটটি । টাকা রেখেই দেয় দৌড়। প্রকাশ পায় তার ভালোবাসা।
আসমা খাতুন ও রাধিকা মুরমুসহ প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত বাবুডাইং আলোর পাঠশালার সকল শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দ সিলেট-সুনামগঞ্জসহ বন্যা দুর্গতদের জন্য এ ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দেয়। আজ সোমবার রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের বাবুডাইং গ্রামে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা সমাবেশ শেষে সামর্থ্য মত টাকা জমা দেয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘সিলেট-সুনামগঞ্জসহ সারা দেশে বন্যা দুর্গতের যে অসহনীয় কষ্ট তা বিশ্ববাসী দেখছে। সেই সব দুর্ভোগের ভিডিওচিত্র ও ছবি গত রোববার শিক্ষার্থীদের দেখানো হয়। এ ছাড়া অনেকেই টেলিভিশনের খবরে তা দেখেছে। পরে দুর্গতের সাহায্যে শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসার কথা বললে সকলেই সম্মত হয়। সকলেই পরের দিন বিদ্যালয়ে টাকা নিয়ে আসে। প্রথম শিফট ছুটির পর সমাবেশ শেষে সকলে সারিবদ্ধভাবে টাকা জমা দেয়। এ ছাড়া শিক্ষক-কর্মচারীরাও সামর্থ্য মত সাহায্য প্রদান করেন। সব মিলিয়ে আট হাজার টাকা জমা পড়ে। এ টাকা প্রথম আলো ট্রাস্টের মাধ্যমে বন্যা দুর্গতদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে । শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার এ মনোভাব তাদের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে ও ভালো কাজের সঙ্গে যুক্ত করতে আগ্রহী করে তুলবে বলে আশা করি।’