ফজিলা এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী দেবেন

আলো চর আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থী ফজিলা খাতুন ২০২২ সালে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করবেন।

কুড়িগ্রাম জেলার প্রথম আলো চর আলোর পাঠশালার একজন শিক্ষার্থী ফজিলা খাতুন। ২০২২ সালে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি পরীক্ষার্থী তিনি। মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষা দেবেন তিনি। প্রথম আলো চর আলোর পাঠশালা থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া যায় না, তাই ঘোগাদহ মালেকা খাতুন বালিকা বিদ্যালয় থেকে ফজিলা পরীক্ষায় অংশ নেবেন।

আলোর পাঠশালার শিক্ষকেরা বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে পুরো চরবাসীদের সচেতনতামূলক প্রচারণা চালান। কিন্তু এই প্রচারণা সচেতন করতে পারেনি ফজিলার বাবাকে। হঠাৎ একদিন তাঁর বাবা বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করে রাখেন। পাড়া-প্রতিবেশী কেউ জানে না। এমনকি ফজিলা নিজেও জানতেন না । জেএসসি পরীক্ষার কয়েক মাস আগে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায় ফজিলার। ঘুম থেকে ওঠেই দেখতে পান কাজী, বর সবাই বিয়ের জন্য প্রস্তুত। কিন্তু তিনি ভেঙে পড়েননি। কিছুক্ষণ পর তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সবখানে খোঁজা খুঁজি শুরু হলো। পরের দিন তাঁকে তাঁর নানা বাড়িতে পাওয়া গেল। অর্থাৎ গভীর রাতে সে বাড়ি থেকে পালিয়ে নানা বাড়ি চলে যান।

ছোট বয়সেই মা মারা যায় ফজিলার। দুই বোনের মধ্যে ফজিলা বড়। বাবা ফজলার রহমান দ্বিতীয় বিয়ে করেন। মেয়ের পড়ালেখার বিষয়ে আগ্রহী নন বাবা। কিন্তু ফজিলা কোনোভাবেই বিয়ে করতে রাজি নন। তাঁর এক কথা, পড়াশোনা করবেন। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করেন। শিক্ষকরাও দায়িত্ব নিয়ে তার বাবা-মা কে বোঝানোর চেষ্টা করেন।

ফজিলা খাতুন বলেন, ‘পড়ালেখা করব, পরীক্ষা দেব, ভবিষ্যতে অনেক বড় মানুষ হব।’ এত প্রতিকূলতাকে পেরিয়ে সে প্রথম আলো চর আলোর পাঠশালা থেকে জেএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ-৪ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।