পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চান রেসমিনা টুডু

রেসমিনা টুডু

রেসমিনার টুডুর বাবা জয়রাম টুডু। পেশায় তিনি কৃষক। কৃষি কাজ করে স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে তাঁর সংসার। নিজের অক্ষরজ্ঞান নেই কিন্তু তিনি জানেন, পড়াশোনার বিকল্প নেই। তাই নিজের সামর্থ্যের মধ্যে যতটা সম্ভব তিনি তাঁর ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করাতে চান। সব ধরনের বাঁধা বিপত্তি অগ্রাহ্য করে ২০১৪ সালে মেয়ে রেসমিনা টুডুকে গুড়িহারী কামদেবপুর আলোর পাঠশালার সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি করান। রেসমিনা ছাত্রী হিসেবে যে ভালো ছিল তা তার এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলই বলে দেয়। জিপিএ-৩.৪৪ নিয়ে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পাস করে রেসমিনা। স্থানীয় কলেজে মানবিক বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের ২য়বর্ষে পড়াশোনা করছেন রেসমিনা টুডু। কি হতে চায় জানতে চাইলে রেসমিনা জানান, 'যতটুকু সম্ভব পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাই, নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। বাবা-মাকে সাহায্য করতে চাই।'

জয়রাম টুডু বলেন, 'আলোর পাঠশালা না থাকলে মেয়েকে পড়াশোনা করানো কঠিন হয়ে যেতো। আলোর পাঠশালার শিক্ষকেরা মেয়েকে সাহায্য করেছেন। আমরা সব সময় কৃতজ্ঞতা থাকবে সকলের কাছে। আমার ছেলেমেয়ে সকলের জন্য আপনাদের আশীর্বাদ চাই।'

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকায় যেখানে শিক্ষার আলো পৌঁছায়নি এ রকম অবহেলিত কয়েকটি এলাকায় শিক্ষার আলো পৌঁছে দিচ্ছে প্রথম আলো ট্রাস্ট। অবহেলিত এসব এলাকার শিশুরা শিক্ষার পরিবর্তে অল্প বয়সেই বিভিন্ন কায়িক শ্রমের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ত। এর পেছনে অসচেতনতার পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভাব ছিল একটা বড় কারণ। সামিট গ্রুপের আর্থিক সহযোগিতায় প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনায় এসব দুর্গম এলাকায় শিক্ষার আলো পৌঁছে যাচ্ছে। আলোকিত হচ্ছে পিছিয়ে পড়া মানুষ। বর্তমানে কুড়িগ্রামে ১টি, রাজশাহীতে ২টি, ভোলায় ১টি, নওগাঁয় ১টি, কক্সবাজারে ১টি করে মোট ৬টি স্কুল পরিচালিত হচ্ছে। স্কুলগুলোতে বর্তমানে ১ হাজার ২০জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।