গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার সাফল্য

গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার প্রধান শিক্ষক মো. নূর আলম বলেন, ‘২০১৫ সালে আলোর পাঠশালা স্থাপিত হওয়ার পর থেকে কোনো শিক্ষার্থী আর ঝরে পড়ে না, এমনকি ঝরে পড়া শিক্ষার্থীরাও পুনরায় আবার পড়াশোনা আরম্ভ করেছে। এই পাঠশালা থেকে ২০১৭ সালে প্রথম জেএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ দু্নজন জিপিএ-৫ পেয়েছে। কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করেছে শতভাগ।’

তিনি আরও জানান, ‘এই গ্রামের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এরাই প্রথম জিপিএ-৫ পেয়েছে। তারা আলোর পাঠশালা ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করেছে। তাদের দেখে অনেক শিক্ষার্থী অনুপ্রাণিত হয়েছে, এমনকি অভিভাবকেরাও তাদের ছেলে-মেয়ের পড়াশোনার প্রতি অনেক দায়িত্বশীল হয়েছে।’

২০১৮ সালের জেএসসি পরীক্ষাতে ১ জন জিপিএ-৫ সহ শতভাগ পাস করে। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী হলো শান্ত দাস, শ্যামলী দাস এবং নাজমুন নাহার নদী। এই বিদ্যালয়ে সাঁওতাল, হিন্দু, খ্রিষ্টান ও মুসলিমসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা করে।

আলোর পাঠশালার শিক্ষক রাজিব দাস বলেন, ‘এই বিদ্যালয়ের ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন খেলাধুলা, বিদ্যালয়ে পালনীয় দিনগুলো ( ১৬ ডিসেম্বর, ২৬শে মার্চ, ২১শে ফেব্রুয়ারি) খুব সুন্দরভাবে উদ্‌যাপন করে। উপজেলা পর্যায়ে পিটি প্যারেডে পর পর তিন বার প্রথম স্থান ও তৃতীয় স্থান দখল করে সুনাম অর্জন করেছে।’

গুড়িহারী গ্রামের বাসিন্দা নুরুল আমিন বলেন, ‘আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থীদের সাফল্যই আলোর পাঠশালা নামটি সার্থক হয়েছে। গুড়িহারী শালবাড়ি এলাকাবাসিদের কাছে একটা অবহেলিত গ্রাম। আর এই অবহেলিত ভাবারও যথাযথ কারণ রয়েছে। কারণ এই গ্রামের শিক্ষার হার অতি নগন্য। কিন্তু বর্তমান এই গ্রামের মানুষ আলোর পাঠশালার মাধ্যমে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়েছে।’

বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকায় যেখানে বহুদিন শিক্ষার আলো পৌঁছায়নি এ রকম অবহেলিত কয়েকটি এলাকায় শিক্ষার আলো পৌঁছে দিচ্ছে প্রথম আলো ট্রাস্ট। সামিট গ্রুপের আর্থিক সহায়তায় প্রথম আলো ট্রাস্ট গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালাসহ ৬টি স্কুল পরিচালনা করছে।