আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থীদের নিয়ে মহান বিজয় দিবস–২০২১ উদযাপন

বিজয়ের ৫০ বছরের বিজয় শোভাযাত্রায় মদনপুর আলোর পাঠশালার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
ছবি: প্রথম আলো।

মদনপুর আলোর পাঠশালা

মেঘনা নদীর মাঝে জেগে ওঠা চর। নাম মদনপুর। ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নে রয়েছে মদনপুর আলোর পাঠশালা। এটি পরিচালনা করছে প্রথম আলো ট্রাস্ট। এ বছর বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী। প্রতিবছরের মতো এবারও মদনপুর আলোর পাঠশালায় বিজয় দিবস ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বিদ্যালয়ের মাঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। পরে ৭ মার্চের ভাষণ মুখস্থ প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা, অনুষ্ঠিত হয়। সব শেষে স্কুলের ছাত্রছাত্রী ও এলাকাবাসীকে নিয়ে একটি শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। মদনপুর আলোর পাঠশালার সামনে থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়ে ইউনিয়ন পাটওয়ারী বাজারে গিয়ে শেষ হয়।

এ ছাড়া সব শিক্ষার্থী মিলে পিটি ও র‍্যালি করে। মদনপুর চরে আলোচনা সভা স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, ইউপি সদস্য, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ প্রথম আলোর ভোলা জেলা প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

প্রথম আলো চরের শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের বিজয় র‍্যালি।
ছবি: প্রথম আলো।

প্রথম আলো চর আলোর পাঠশালা

প্রথম আলো চর আলোর পাঠশালা প্রতিবছর মহান বিজয় দিবস উদ্‌যাপন করে থাকে। করোনা মহামারিতে দীর্ঘদিন বিদ্যালয় বন্ধ ছিল। বহুদিন পর শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখর বিদ্যালয় এবং স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি—সব মিলিয়ে এ বছর বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন উপলক্ষে চার দিনব্যাপী কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়। যা অন্যান্য বছরের উদ্‌যাপন থেকে একটু ভিন্ন ধারা নিয়ে আসে। চার দিনব্যাপী কর্মসূচির শেষ দিন ছিল মহান বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর। এদিন সকালে অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বনাঢ্য এবং বর্ণিল সাজে বিদ্যালয় চত্বরে উপস্থিত হতে শুরু করে। তাদের মাথায় লাগানো ছিল বিজয় দিবসের বিশেষ ব্যাচ। অনেকে মুখে ও হাতে মহান বিজয় দিবসের স্টিকারও লাগিয়ে ছিল। অনেক আবার গৌরবের লাল সবুজের পতাকা হাতে নিয়ে এসেছিলো। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণও সেজেছিল রঙিন সাজে। প্রথম আলো চরের সুশীল ব্যক্তিবর্গ এবং অত্র প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যগন উপস্থিত হয়েছিলেন। শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সকলের উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়, উত্তোলন শেষে পতাকাকে সম্মান প্রদর্শন করা হয়।

বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পুরুষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রথম আলো চর আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থীরা।
ছবি: প্রথম আলো।

এরপর সকলের সুললিত কন্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। প্রথম আলো চরের আকাশ বাতাস যেন সুরের মহিমায় গৌরবান্বিত হয়ে ওঠে। সংগীত শেষে, শিক্ষার্থীরা লাল সবুজের পতাকা উড়িয়ে চরের বিভিন্ন রাস্তায় র‍্যালি প্রদর্শন করে। এ র‍্যালি তে সকলের উপস্থিতিতে মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। চরের সবুজ প্রকৃতির সাথে লাল সবুজের পতাকা যেন একাকার হয়ে যায়। র‍্যালি শেষে, চতুর্থ দিনের নির্ধারিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতা শেষে শিক্ষার্থীরা বলেন, তাদের কাছে পুরুষ্কার অর্জন বড় কথা নয়। তারা এই দিনে আনন্দ করতে পারছে এটাই তাদের পাওয়া। সবশেষে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পুরুষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে জনাব ফজলার রহমান বলেন, আমরা ১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস উদযাপন করেছি। তখন আনন্দে চোখ দিয়ে পানি ঝড়েছিল। দুখের পরে যখন আনন্দ আসে, সেই আনন্দ যে কত মধুর তা বলে বোঝাতে পারব না। অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক, আতাউর রহমান বিজয় দিবসের গৌরবগাঁথা এবং তাৎপর্য জীবনে লালন করার এবং দেশ সেবা করার পরামর্শ দেন। অতঃপর পুরুষ্কার বিতরণ করা হয়। পরিশেষে, সভাপতি সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

দমদমিয়া আলোর পাঠশালায় হাই জাম্প খেলায় অংশ গ্রহণকারী শিক্ষার্থী।
ছবি: প্রথম আলো।

দমদমিয়া আলোর পাঠশালা

মহান বিজয় দিবস ও বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে কক্সবাজারের টেকনাফে দমদমিয়া আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা সকালে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও একটি বিজয় শোভাযাত্রা বের করেন। এটি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া নাফ নদীর তীরঘেঁষা বিদ্যালয়।

শোভাযাত্রা শেষে বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে একাত্তরের বীর শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের সূচনা খেলাধুলার আয়োজনে ছিল ছেলে–মেয়েদের হাই জাম্প ও লং জাম্প, ছেলে–মেয়েদের বিস্কুট খেলা, কবিতা আবৃত্তি, দেশাত্মবোধক গান, অভিভাবকদের ম্যাজিক বল, যেমন খুশি তেমন সাজ ও হাঁড়িভাঙা ইত্যাদি।

পরে বিদ্যালয়ের মাঠে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফরিদুল আলম, সাংবাদিক আমান উল্লাহ আমান, দাতাসদস্য ছৈয়দুল আমিন, শামসুল আলম, ইমাম হোসেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বাবুল ইসলাম, সৈয়দ নুর, মিলাদুন্নবী, রবিউল আলম প্রমুখ।