গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মো. মুস্তাকিম। তার বাড়ি গুড়িহারী গ্রামে। তার বাবা মৃত আলমগীর হোসেন এবং মা মোসা. আঙ্গুর বেগম গৃহিণী। দুই ভাইয়ের মধ্যে মুস্তাকিম ছোট। তার বয়স যখন ৫ বছর তখন তার বাবা স্ট্রোক করে মারা যায়। বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের সকল দায়-দায়িত্ব পড়ে মা ও বড় ভাইয়ের ওপর। তখন তার বড় ভাই অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। বড় ভাই স্কুলের পাশাপাশি এবং ছুটির দিনে অন্যের জমিতে কাজ করে কোনো রকমে সংসারে জোগান দিত। এরমধ্যেই ঋণের কারণে তাদের সংসারে চরম অভাব দেখা দেয়। এমতাবস্থায় মুস্তাকিমের বড় ভাই কাজের সন্ধানে ঢাকায় চলে যায়। তখন সংসারের দায়-দায়িত্ব অনেকটাই মুস্তাকিমের কাঁধে পড়ে। তাই স্কুলের পাশাপাশি অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাতে সহযোগিতা করে। তবে পড়াশোনা চালিয়ে যাবে বলে জানায় সে।
যে বয়সে খেলার মাঠে খেলতে যাওয়ার কথা সে বয়সে মুস্তাকিমকে মাঠে কাজ করতে যেতে হয়। তারপরও শত অভাব-অনটন, দুঃখ-কষ্টের মাঝেও লেখাপড়া থেকে দূরে সরে যায়নি। লেখাপড়া শিখে সে জীবনে উন্নতি করতে চায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মুস্তাকিম জানায়, ‘বাবার মৃত্যুর পরই আমি জেনেছি বাস্তবতা কতটা কঠিন। লেখাপড়া ছাড়া আমি এই কঠিন বাস্তবতার সঙ্গে লড়া যাবে না। আমি বড় হয়ে আমার বাবার সকল ঋণ পরিশোধ করতে চাই এবং মায়ের মুখে হাসি ফুটাতে চাই।’
মুস্তাকিমের মা মোসা. আঙ্গুর বেগম বলেন, ‘হামি গরিব মানুষ। সন্তানদের নিয়ে নিজে কষ্ট করে সংসার চালাই। আমার ছেলে স্কুলের প্রতি বেশ আগ্রহী। আমার ছেলে এই বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকে নানা সুবিধা পেয়েছে যার কারণে পড়াতে পারতাছি। স্কুল থেকে পোশাক, মশারি, স্কুল ড্রেস ও বিভিন্ন সময় ত্রাণ সামগ্রী দিয়েছে। এ জন্য হামি তাদের ধন্যবাদ জানাই।’