হাফিজা চায়না সমাজে আর কোনো বাল্যবিয়ে হোক

রাজশাহী আলোর পাঠশালার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোছা: হাফিজা খাতুন।

মানুষ তার জন্ম পরিচয় কিংবা আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে স্বপ্ন দেখে না। কিন্তু রাজশাহী আলোর পাঠশালার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোছা: হাফিজা খাতুন এইসব বিষয় ভেবেই স্বপ্ন দেখে। যখন হাফিজা ছোট ছিল তখন ভাবতো বড় হয়ে ডাক্তার হবে। কিন্তু একটু বড় হওয়ার পরে সে বুঝতে পারে তার পরিবারের অবস্থা এমন না যে সে চাইলেই ডাক্তার হতে পারে। সে বুঝতে পারে তাকে এমন স্বপ্ন দেখতে হবে যে স্বপ্ন পূরণ করা যাবে। হাফিজা এখন স্বপ্ন দেখে সে একজন নার্স হবে।

বাবা-মা এবং দুই বোন নিয়ে হাফিজার পরিবার। হাফিজার বাবা একজন সবজি ব্যবসায়ী। তিনি ফেরি করে সবজি বিক্রি করেন । মা মানুষের বাসা বাড়িতে কাজ করে। অভাবের কারণে বড় বোনের বাল্যবিবাহ হয়েছে । হাফিজা কোনভাবেই বাল্যবিবাহের শিকার হতে চায় না। সে স্বপ্ন দেখে একদিন কোনো মেয়েকেই পরিবারের অভাবের কাছে হার মেনে বাল্যবিবাহের শিকার হতে হবেনা। তার অদম্য ইচ্ছা সে একজন নার্স হবে। হাফিজার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল কেন তার এই ইচ্ছা। সে বলেছিল, ' আমি মানুষের সেবা করতে চাই। আমি হাসপাতালে দেখেছি নার্সরা দিন-রাত রোগীদের সেবা করে। ছোট থাকতে ভাবতাম ডাক্তার হব। এখন বুঝতে পারি ডাক্তার হবার মত অবস্থা আমাদের নেই । তাই ঠিক করেছি নার্স হয়ে মানুষের সেবা করব। আর মানুষের সেবাই তো সবচেয়ে বড় ধর্ম।' হাফিজার বাবা বলেন, আমার মেয়ে ছোট থেকেই মানুষের বিপদে-আপদে এগিয়ে যায়। আমরাও চাই সে নার্স হয়ে মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করুক। তার স্বপ্ন পূরণের জন্য আমরা আমাদের যথাযথ চেষ্টা করব। প্রথম আলো ট্রাস্টকে ধন্যবাদ আমার মেয়ের মতো হাজারো গরিব শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পড়াশোনার সুযোগ দেওয়ার জন্য।