উঁচু উঁচু পাহাড় ও সজুবে ঘেরা একটি গ্রামের নাম চিনি পাড়া। জুমচাষের সুবিধার্থে পাহাড়ের গায়ে তঞ্চঙ্গ্যারা কয়েকটি পরিবার নিয়ে একটি পাড়া গড়ে তুলেছে। এই পড়াটি কচ্ছপতলী এলাকা থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন, যেখানে পায়ে হেঁটে না গেলে পৌঁছানো যায় না। সেই দুর্গম পাহাড়ের পাড়া থেকে কচ্ছপতলী আলোর পাঠশালায় পড়তে আসে এক শিক্ষার্থী। সদা হাস্যোজ্জ্বল, সাহসী ও প্রতিবাদী এই শিক্ষার্থীর নাম লিপিকা তঞ্চঙ্গ্যা।
লিপিকা তঞ্চঙ্গ্যার বাবা উদারকুমার তঞ্চঙ্গ্যা ও মা উল্লাবী তঞ্চঙ্গ্যা দুজনে জুম চাষি। অসচ্ছল এই পরিবারের চার ভাইবোনের মধ্যে লিপিকা তৃতীয় সন্তান। প্রতিদিন নিজ বাড়ি থেকে আসা যাওয়া করা সম্ভব নয় বলে নিকট আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে লিপিকা। তার দুচোখে আছে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন। নিজেকে পাহাড়ের মত সুদৃঢ় ও উঁচু করে গড়ে তুলতে চায়।
লিপিকা তোমার জীবনের লক্ষ্য কী? এর উত্তরে লিপিকার স্বতঃস্ফূর্ত উত্তর, ‘আমি একজন পুলিশ কর্মকর্তা হতে চাই। আমি দেশের হয়ে কাজ করতে চাই। আমার পাহাড় থেকে দেশে জন্য নিয়োজিত হয়ে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সহায়তা করতে চাই। আর আমি আশাবাদী যে, আমি আমার স্বপ্ন পূরণ করতে পারব।’
কচ্ছপতলী আলোর পাঠশালার শিক্ষক বলেন, ‘লিপিকার লেখা পড়ায় ভালো। সপ্তম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে উত্তীর্ণ হয়েছে। তার লেখাপড়া প্রতি আগ্রহ, উদ্দীপনা ও সাহসিকতায় সে তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে বলে আমি মনে করি এবং তার জীবনে সার্বিক উন্নতি হোক এই কামনা করছি।’