শিক্ষার্থীদের কৈশোরকালীন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

রাজশাহী আলোর পাঠশালায় শিক্ষার্থীদের কৈশোরকালীন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অপরাজেয় তারুণ্য প্রকল্পের পরিচালনায় রাজশাহী আলোর পাঠশালায় ‘রিপ্রোডাকটিভ হেলথ সার্ভিসেস ট্রেনিং অ্যান্ড এডুকেশন প্রোগ্রাম’ করা হয়েছে। গত ২৮ এপ্রিল বুধবার ‘কৈশোরকালীন স্বাস্থ্য শিক্ষায় গড়ে উঠুক আগামী নিরাপদ’ এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে দুই ঘণ্টার একটি স্কুল অ্যাওয়ারনেস সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল নবম ও দশম শ্রেণির ২১ জন মেয়ে শিক্ষার্থী এবং ১১ জন ছেলে শিক্ষার্থী।

এই স্কুল অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রামটি আয়োজন করা হয়েছে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে কৈশোরকালীন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করার উদ্দেশ্যে। এই বয়সে শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক পরিবর্তন ঘটে, তা যদি সঠিকভাবে পরিচালিত না হয়, তবে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। বিশেষভাবে, বাল্যবিবাহ, স্বাস্থ্যহানি, অনিরাপদ আচরণ ও মানসিক চাপ নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য এই প্রোগ্রামের আয়োজন।

কৈশোরকালীন স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক কর্মশালায় নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।

এই প্রোগ্রামের প্রধান লক্ষ্য ছিল, শিক্ষার্থীদের মধ্যে বয়ঃসন্ধিকালীন স্বাস্থ্য, মানসিক ও শারীরিক পরিবর্তন সম্পর্কে জানানো এবং তাদের সচেতন করা যেন তারা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি আরও গুরুত্ব দিতে পারে। এ ছাড়া, বাল্যবিবাহের কুফল এবং স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোকপাত করা হয়।

প্রোগ্রামটি শুরু হয় ইয়ুথ অফিসার মো. ফরিদুল ইসলামের শুভেচ্ছা বক্তব্য দিয়ে, এরপর মূল বক্তব্যের পর, মেয়রদের আলোচনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। পরবর্তীতে প্রশ্ন-উত্তর পর্বে শিক্ষার্থীরা তাদের কৌতূহল প্রকাশ করে এবং সেশনের শেষে শিক্ষার্থীদের মাঝে উপহার বিতরণ এবং সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে প্রোগ্রামটি শেষ হয়।

কর্মশালা শেষে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ প্রদান।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে মো.ফরিদুল ইসলাম বলেন, কিশোর-কিশোরী বয়সে শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনগুলো যদি সঠিকভাবে বুঝে এবং সচেতনভাবে মোকাবিলা করা না হয়, তবে তা তাদের ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই আমাদের এই প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য তাদের জানানো এবং সচেতন করা

প্রজেক্ট অফিসার দীপ্তি সরকার মূল বক্তব্যে বয়ঃসন্ধিকালীন শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি জানান, মেয়েরা এই সময়ে শারীরিকভাবে অনেক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়, যেমন: ঋতুচক্র শুরু হওয়া, শারীরিক বৃদ্ধি, মেজাজের পরিবর্তন ইত্যাদি। তাই তাদের স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখা প্রয়োজন, যাতে তারা নিজেদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো নিরাপদে এবং স্বাস্থ্যকরভাবে অতিবাহিত করতে পারে। একইভাবে ছেলেরা বয়ঃসন্ধিকালে শারীরিক পরিবর্তন যেমন: শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি, গভীর কণ্ঠস্বর, ইত্যাদি অনুভব করে। তাদের জন্যও স্বাস্থ্য সচেতনতা প্রয়োজন, যাতে তারা এই সময়গুলো নিরাপদভাবে পার করতে পারে।

শিক্ষার্থীরা লিখিত আকারে তাদের প্রাপ্ত শিক্ষার অভিজ্ঞতা প্রকাশ করে। তারা জানায়, এই প্রোগ্রাম থেকে তারা শিখেছে কীভাবে কৈশোরের পরিবর্তনগুলোকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করতে হয় এবং কীভাবে স্বাস্থ্যসম্মত জীবন গঠন করা যায়। অনেকে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার অঙ্গীকার করে। শেষে অংশগ্রহণকারী সকল শিক্ষার্থীকে নাশতা ও শিক্ষা উপকরণ ও সম্মাননা গিফট প্রদান করা হয়।