নারী শিক্ষা ও সচেতনতায় কাজ করতে চায় সুফিয়া খাতুন

বাবুডাইং আলোর পাঠশালার নবম শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী মোসা. সুফিয়া খাতুন।

রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের বাবুডাইং গ্রামে অবস্থিত প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত বাবুডাইং আলোর পাঠশালার নবম শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী মোসা. সুফিয়া খাতুন। তার বাবার নাম মো. জিল্লার রহমান। তিনি পেশায় একজন হরেক মালের দোকানদার। তার মায়ের নাম মোসা. ফেরদোসী বেগম। তিনি একজন গৃহিণী। সুফিয়া পরিবারের বড় সন্তান। তার ছোট ভাই মো. সামিরুল ইসলাম অটিস্টিক শিশু। সামিরুলও এই বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী। পড়ালেখায় অদম্য ইচ্ছা ও আগ্রহ থাকায় তারা দুই ভাইবোন প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরবর্তী গ্রাম থেকে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে থাকে। পরিবার থেকে বেশ কয়েকবার বিয়ের কথা হলেও রাজি হয়নি সুফিয়া। সুফিয়া পড়ালেখা করতে চায়। পড়ালেখা করে উচ্চশিক্ষিত হয়ে নারী শিক্ষা সচেতনতায় কাজ করতে চায় সে।

সুফিয়া বলে, ‘দেশ ও জাতি গঠনে নারী শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। নারী ও পুরুষ সমাজের দুটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। সুতরাং সমাজ গঠনে দায়িত্ব-কর্তব্য পালনে পুরুষের পাশাপাশি নারীকে কর্মমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে। যা তাদের জীবন ও কর্মকে অর্থবহ করবে।’

বাবুডাইং আলোর পাঠশালার নবম শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী মোসা. সুফিয়া খাতুন।

সে আরও বলে, ‘বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে নারী শিক্ষার প্রধান অন্তরায় হলো কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামি, বাল্যবিবাহ ও দারিদ্র্য। বিশেষ করে আমাদের এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে দারিদ্র্যসহ নানামুখী সামাজিক প্রতিবন্ধকতার কারণে কন্যা সন্তান বোঝা স্বরূপ। এ ছাড়া অভাব-অনাটনের সংসারে ব্যয়ভার কমাতে বাল্যবিবাহ দিয়ে থাকে। এ ছাড়া ধর্মীয় অনুশাসন নিরাপত্তার অভাবে অনেক অভিভাবকই তাদের কন্যা সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে চায় না। ফলে নারী শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকে। সুতরাং এ সকল সমস্যা থেকে জনগণকে মুক্ত করতে না পারলে শুধু শিক্ষা সংকট নয় দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনাতেও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।’

শিক্ষকদের কাছে সুফিয়া বলে, ‘প্রথম আলো ট্রাস্ট নারীদের প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল। নারী শিক্ষা, বাল্যবিবাহ, যৌতুক প্রথা, নারী নির্যাতন, নারীদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধমুলখ নানামুখী কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে থাকে। নারী শিক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টি আমাদের সর্বস্তরের মানুষের মতৈক্য, সক্রিয়তা ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।’