কলেজ পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার স্বপ্ন শান্তনার

এ বছর (২০২৪) প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত রাজশাহী আলোর পাঠশালা থেকে জিপিএ ৪.২৮ পেয়ে এসএসসি পাস করেছে শান্তনা।

একদিন ক্লাস টেনে ইংরেজি শিক্ষক সবাইকে জিজ্ঞাসা করল,কার কী স্বপ্ন! সবাই বলতে থাকল। শুধু চুপ ছিল শান্তনা। তাকে আলাদা করে জিজ্ঞাসা করলে জানায়, ‘দারিদ্র্যের কারণে আমি স্বপ্ন দেখতে ভয় পাই।’

বাবা-মায়ের তিন সন্তানের মধ্যে মেজো মেয়ে শান্তনা। রাজশাহীর চরখিদিরপুরের জেলে পরিবারের মেয়ে সে। তার বাবা একসময় মাছ ধরত, কয়েক বছর যাবৎ অসুস্থতার জন্য কিছুই করতে পারেন না। পরিবারের এই অবস্থায়ও মনোবল ধরে রেখেছে শান্তনা। এ বছর (২০২৪) প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত রাজশাহী আলোর পাঠশালা থেকে জিপিএ ৪.২৮ পেয়ে এসএসসি পাস করেছে শান্তনা।

তবে পরীক্ষার পেছনের গল্পটা মোটেও মসৃণ ছিল না তার। সকালে বাড়িতে না খেয়ে কোনোমতে স্কুলে চলে আসত। নদী পার হয়ে স্কুলে আসতে নৌকা ভাড়ার কথা চিন্তা করতে হতো তাকে। স্কুলের ম্যাডামেরা অনেক সময় জোর করে নাশতা করাত। লাজুক স্বভাবের মেয়ে হওয়ায় বেশির ভাগ সময়ই স্বীকার করতে চাইত না—তার কেন মন খারাপ থাকে। এভাবে পরীক্ষার সময় চলে আসে। এসএসসির ফরম পূরণের আগে স্কুলে এসে জানায়, তার পক্ষে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে না। কারণ তার বাবা ফরম পূরণের টাকা জোগাড় করতে পারবে না। এটা শুনে তার শিক্ষকগণ ফরম পূরণের টাকা জোগাড় করে দেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রকৌশলী তার পরীক্ষার কথা শুনে সহযোগিতা করেন। বাকিটা শিক্ষকেরা দেন। এভাবে কোনোভাবে পরীক্ষা দেয় শান্তনা।

এসএসসি পাস করার পর আসল কলেজে ভর্তি যুদ্ধ। কলেজে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। পরে আলোর পাঠশালার শিক্ষকদের সহায়তা কলেজে ভর্তি হয় শান্তনা। কলেজ পাস করে ভার্সিটিতে ভর্তি হতে চায় শান্তনা।