প্রত্যন্ত এলাকার একটি মেয়ে সংগীতা টুডু। বাবুডাইং আলোর পাঠশালার কোল নৃগোষ্ঠীর এই শিক্ষার্থী ছবি আঁকতে ভালোবাসে। ছবি আঁকার পাশাপাশি নাচ-গানেও পটু সংগীতা। সে এবার প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত বাবুডাইং আলোর পাঠশালার থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেবে।
সংগীতা টুডু ভাষায়, ‘ছবি আঁকতে আমার খুব ভালো লাগে। ভালো লাগে আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থী হিসেবেও। কেননা এ বিদ্যালয়ের উদ্যোগে বছরে একাধিকবার চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এ ছাড়া নানা সৃজনশীল কর্মযজ্ঞ লেগেই থাকে। শিক্ষকদের আন্তরিকতা আমাদের পড়ালেখায় উৎসাহ জোগান দিয়ে থাকে। আমাদের দেখাদেখি ছোট থেকেই অন্য শিক্ষার্থীরাও ছবি আঁকতে বা চারুকলা বিষয়ে, স্কাউটিং বিষয়ে হাতে-কলমে শিক্ষালাভ করে থাকে। আমরা শুধু বিদ্যালয়েই ছবি আঁকি তা নয়। আমরা এর অনুশীলন করি বাড়িতেও। বিভিন্ন পালা-পার্বণসহ অন্যান্য সময়েও বাড়ির মাটির দেয়ালগুলো লেপে-পুঁছে তাতে মনের মাধুরী মিশিয়ে আলপনা আঁকি, ছবি আঁকি। এসব করতে আমাদের খুব ভালো লাগে।’
সংগীতা টুডুর মা কল্পনা কোল মুরমু বলেন, ‘আমাদের মতো পিছিয়ে পড়া কোল জনগোষ্ঠীর ছেলেমেয়েরা পড়ালেখা করে এগিয়ে যাচ্ছে তা খুব আনন্দের বিষয়। বাবুডাইং আলোর পাঠশালার নানা শিক্ষামূলক আয়োজন আমাদের শিশুদের মনে আগ্রহ ধরে রেখেছে। আমার বড় মেয়ে ও মেজো ছেলে এ বিদ্যালয়েই পড়াশোনা করে। মেয়েটা ভালো ছবি আঁকে। নাচের দলের সদস্যও সে। এ ছাড়া আমার ছেলেটাও বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক দলের সদস্য। আমি আশা করি আমার মেয়েটা পড়ালেখা করে উচ্চশিক্ষা লাভ করুক। এতে আমাদের সার্বিক সহযোগিতা থাকবে। তা ছাড়া আলোর পাঠশালার সদয় দৃষ্টি ও সহযোগিতা আমাদের সেই স্বপ্ন দেখতেও শিখিয়েছে। বুঝতে সাহায্য করেছে শিক্ষা ছাড়া অন্ধকার দূর করা সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত বিদ্যালয়টিতে এ বছর ২৫৮ জন শিক্ষার্থী প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ গ্রহণ করছে। এ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা বিনা খরচে পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়ে থাকে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোল ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও বাঙালির শিশুরা মিলেমিশে পাঠ গ্রহণ করে।