নানা কর্মসূচি আর বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বাবুডাইং আলোর পাঠশালায় মহান বিজয় দিবস উদ্যাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী তীর নিক্ষেপ, হাঁড়িভাঙা, মেয়েদের রশি টানাসহ নানা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। স্কুলটি পরিচালনা করে প্রথম আলো ট্রাস্ট।
এবারের বিজয় দিবসে বিদ্যালয়ের স্কাউট গ্রুপ প্রথমবারের মতো গোদাগাড়ী উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দুটি ক্ষেত্রেই দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। সকাল সাতটায় বাবুডাইং গ্রাম থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে উপজেলা সদরের অনুষ্ঠানে অংশ নেয় স্কাউট দল।
বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সকাল নয়টায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ১২টি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি অভিভাবক ও গ্রামবাসীদের জন্য ছিল তীর নিক্ষেপ, মেয়েদের জন্য রশি টানা, শিক্ষকদের জন্য হাঁড়িভাঙা এবং উন্মুক্ত যেমন খুশি তেমন সাজো প্রতিযোগিতা। দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থী, গ্রামবাসী, প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও আমন্ত্রিত অতিথিরা যোগ দেন।
প্রতিযোগিতা শেষে বিজয় দিবসকেন্দ্রিক আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রতিযোগিতার পুরস্কার নিয়ে স্কাউট গ্রুপ বিদ্যালয়ে ফিরলে তাদের ফুল দিয়ে ও বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে শুভেচ্ছা জানান শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী উজ্জামান নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার হোসেন, নবাবগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক শফিউল আজম, কোল নারী নেত্রী রুমালি হাঁসদা, সহকারী প্রধান শিক্ষক শংকর চন্দ্র দাসসহ অন্যরা। সহকারী শিক্ষক সাঈদ মাহমুদ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
প্রাক্তন শিক্ষার্থী শিমন্ত টুডু তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘ছোট থেকেই আমি বিদ্যালয়ের বিভিন্ন দিবসকেন্দ্রিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কার পেয়েছি। আমাদের অভিভাবকরাও এসব প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে থাকেন। এ অনুষ্ঠানগুলোতে একটি সম্প্রীতির বন্ধন দেখা যায়, যা সকলের মাঝে ভালো লাগার সৃষ্টি করে। এ বন্ধন অটুট থাকুক এই কামনা করি।’
সিনিয়র শিক্ষক শফিউল আজম বিদ্যালয়টির প্রশংসা করে বলেন, ‘এ বিদ্যালয়টি একটি অবহেলিত প্রান্তিক এলাকার শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে নিতে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রচেষ্টা খুবই আন্তরিক। তাঁদের নানা প্রচেষ্টায় শিক্ষার্থীরা এগিয়ে যাচ্ছে। এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।’
দিনের শেষে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।