ভবিষ্যতে একজন শিক্ষিত মা হতে চায় তামান্না
জান্নাতুন্নেসা তামান্না, এবার রাজশাহী আলোর পাঠশালা থেকে এসএসসি পাস করেছে সে। ২০২৪ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু দশম শ্রেণিতে নির্বাচনী পরীক্ষার কিছুদিন আগে তাকে তার বাবা-মা বিয়ে দিয়ে দেয়। ফলে বছরে শতভাগ উপস্থিতির মেয়েটির বন্ধ হয়ে যায় স্কুলে আসা যাওয়া। ফরম পূরণ করার পরও মেয়েটি আর পরীক্ষা দিতে পারেনি। কিন্তু তামান্নার মনের সুপ্ত একটি ইচ্ছা ছিল যে, যেভাবেই হোক পরীক্ষা দেবেই। অবশেষে পরীক্ষা দিয়ে ২০২৫ সালে মানবিক বিভাগ থেকে ৩.৬৭ পেয়ে পাস করেছে তামান্না।
২০২৪ সালে তামান্নার ব্যাচের সবাই পরীক্ষা দিয়ে পাস করে। মন খারাপ হয় তামান্নার। স্কুলের শতভাগ পাসের রেজাল্ট শুনে তামান্না তার শ্বশুরবাড়িতে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার এবং স্কুলে এসে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলার বিষয়ে জানায়। তামান্নার ইচ্ছা দেখে তার শ্বশুর-শাশুড়ি তাকে পড়াশোনার জন্য উৎসাহ দেয়। একদিন তামান্না তার শাশুড়িকে নিয়ে স্কুলে আসে। শিক্ষকদের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলে এবং জানায়, টেস্ট পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েই এসএসসি পরীক্ষা দেবে সে। পর দিন থেকে তামান্না নিয়মিত স্কুলে আসে। নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। নির্বাচনী পরীক্ষার পরের দিন থেকে ফাইনাল পরীক্ষা পর্যন্ত সে প্রতিদিন স্কুল করেছে।
শ্বশুর বাড়িতে সব কাজ করে সে স্কুলে আসত। তামান্নার স্বামীর পড়াশোনার গণ্ডি হাইস্কুল পার না হলেও তামান্না চায় পড়াশোনা শেষ করতে। ভবিষ্যতে একজন শিক্ষিত মা হতে চায় তামান্না, যেন সে তার সন্তানের কথা বুঝতে পারে। তার সঙ্গে তার বাবা-মা যেটা করেছে, তার সন্তানের সঙ্গে সেটা যাতে না হয়। শিক্ষিত মা হয়ে তামান্না তার সমাজের জন্য একজন উদাহরণ হতে চায়।