একজন দক্ষ সাঁতারু হওয়ার স্বপ্ন মেঘনা মারডী
মেঘনা মারডী গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার সপ্তম শ্রেণির একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী। মেঘনার ইচ্ছা বড় হয়ে সাঁতারু হওয়ার। তার বাড়ি টিকরামপুর গ্রামে। তার বাবা সাম মারডী ও মা কাজলী টুডু। তারা দুই ভাই এক বোন। ভাইবোনের মধ্যে মেঘনা ছোট। তার বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের সকল দায়িত্ব এসে পড়ে দুই ভাইয়ের কাঁধে। ভাইয়েরাও তখন খুব একটা বড় না। তার বড় ভাই দিনমজুরের কাজ করে আর ছোট ভাই অন্যের হাঁস চরানোর কাজ করে যা পায় তাই নিয়ে তাদের অভাবের সংসার চলে।
মেঘনার দুইভাই বলেন, ‘আমাদের শত কষ্ট হলেও আমরা আমাদের ছোট বোনের মনের ইচ্ছা পূরণ করব। মেঘনা লেখাপড়ায় বেশ ভালো। সাঁতারের পাশাপাশি সে ফুটবল, কাবাডি ও হ্যান্ডবল খেলাতেও বেশ পারদর্শী। মেঘনা মারডী 'গ্রীষ্মকালীন আন্ত স্কুল জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০২৫' এর আওতায় নিয়ামতপুর উপজেলা পর্যায়ে সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করে জেলা পর্যায়ে অংশ নেয়।’
মেঘনা মারডী বলে, 'আমি প্রতিদিন ২০ মিনিট করে আমাদের বাড়ির পুকুরে সাঁতার প্র্যাকটিস করি। এতে করে সাঁতারও শেখা হয়, আবার ব্যায়ামও হয়। আমি একদিন অনেক বড় সাঁতারু হব, এটাই আমার স্বপ্ন। আমাকে সাঁতার শেখার জন্য স্কুলের শিক্ষকেরা অনেক সহায়তা করেন। আমি এই স্কুলের সকল শিক্ষক ও প্রথম আলো ট্রাস্টকে অনেক ধন্যবাদ জানাই।'
মেঘনার মা কাজলী টুডু বলেন, ‘হামার স্বামী মারা যাওয়ার পর কামের লোক না থাকায় ব্যাটাদের কাঁধে সংসারের ভার পড়ে। হামার ব্যাটাদের কষ্টের সামান্য টাকা দিয়ে সংসার চালায় এবং বেটির লেখাপড়া করাছি। হামার বেটি সাঁতার ভালো পায়। সাঁতারেরও বলে প্রতিযোগিতা হয়, তাই সে স্কুল থেকে সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ লিয়ে ফাস্ট হছে। যতই কষ্ট হোক হামি হামার বেটির মনের আশা পূরণ করমু এবং প্রথম আলো ট্রাস্টের কাছে সহায়তা ও স্কুলের শিক্ষকদের কাছে আশীর্বাদ চাই।’
টিকরামপুর গ্রামের মিস্ত্রি কিসকু বলেন, 'মেঘনা খুব ভালো মেয়ে। সে লেখাপড়ায় বেশ ভালো। সে প্রতিদিন স্কুলে যায়। সে সাঁতার ভালো পারে। তাই আশীর্বাদ করি সে যেন দক্ষ সাঁতারু হয়ে দেশ ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করে।'