বান্দরবানের দুর্গম এলাকা কচ্ছপতলীতে জন্ম ও বেড়ে ওঠা সাইংনু মারমার। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনা, খেলাধুলা, গান ও নাচে আগ্রহী হয়ে উঠেছিলো মেয়েটি। কিন্তু গ্রামের একমাত্র মাধ্যমিক স্কুলটি অর্থাভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সাইংনু মারমার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। ২০২৩ সালে কচ্ছপতলী আলোর পাঠশালা পরিচালনার দায়িত্ব নেয় প্রথম আলো ট্রাস্ট। কচ্ছপতলীর শিক্ষার্থীদের নতুন করে পড়ালেখার দ্বার উন্মোচিত হয়। সাইংনু মারমা নতুন করে পড়াশোনা শুরু করে। সাইংনু মারমা পড়ালেখার পাশাপাশি সহাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমে ভালো করছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন দেখে সাইংনু।
পাহাড়ের দুর্গম অঞ্চলের মেয়ে সাইংনু মারমা বর্তমানে কচ্ছপতলী আলোর পাঠশালায় নবম শ্রেণিতে অধ্যায়ন করছে। বাবা-মায়ের তিন সন্তানের মধ্যে সবার ছোট সাইংনু। বড় দিদি ও দাদা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। কচ্ছপতলী আলোর পাঠশালা নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাইংনু বলেন, ‘ আর্থিক সংকটের কারনে আমাদের স্কুলটি একসময় বন্ধ হয়ে যায়। তাই আমার বড় দিদি ও দাদার পড়াশোনা হয় নি। আমরা প্রথম আলো ট্রাস্টের প্রতি কৃতজ্ঞ, প্রতিষ্ঠানটি আমাদের স্কুলের দায়িত্ব নিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি শৃঙ্খলা ছাড়া জীবনে সফল হওয়া যায় না। সেনাবাহিনীর শৃঙ্খলা আমাকে আকৃষ্ট করেছে। ভবিষ্যতে পড়াশোনা শেষ করে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চাই।’
সাইংনু মারমার বাড়ি পাঠশালা থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে খক্ষ্যং হেডম্যান পাড়ার দুর্গম এলাকায়। ছোটবেলা থেকে মাইলের পর মাইল হেঁটে গিয়ে স্কুলে পড়াশোনা করছে সাইংনু। দৃঢ়চেতা মনোভাবের সাইংনু ছুটির দিনগুলিতে পরিবারকে আর্থিকভাবে সহযোগিতার জন্য দিন মজুরির কাজ করে।
উল্লেখ্য, বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলায় অবস্থিত কচ্ছপতলী আলোর পাঠশালাটিতে বর্তমানে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকার্যক্রম চালু রয়েছে। কচ্ছপতলী আলোর পাঠশালাসহ দেশব্যাপি ৭টি স্কুল পরিচালনা করছে প্রথম আলো ট্রাস্ট।