পদ্মার চরের দুর্গমতা পেরিয়ে শিক্ষায় আলোয় ফিরল ঝরে পড়ার ঝুঁকিতে থাকা পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণরা

পদ্মার চর খানপুরে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি এবং ঝরে পড়ার ঝুঁকিতে থাকা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করছেন রাজশাহী আলোর পাঠশালার শিক্ষকেরা।

' অন্ধকারে আলোর সন্ধানে আলোর শিক্ষকগণ ' —এই স্লোগানকে সামনে রেখে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির লক্ষ্যে রাজশাহী আলোর পাঠশালার শিক্ষকদের ফিল্ড ওয়ার্ক চলছে। এরই অংশ হিসেবে গত ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখে শিক্ষকেরা পদ্মার চর খানপুরে এক বিশেষ 'অভিযান' চালান। নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি এবং পুরানো শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর নিতে শিক্ষকেরা নদী পার হয়ে চরের দুর্গম পথ পাড়ি দেন। সেখানে শিক্ষকদের আগমন সংবাদে আলোর পাঠশালার বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ছুটে আসে। তাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা শিক্ষকদেরকে অনুপ্রাণিত করে।

অভিভাবকদের কাছে শিক্ষার সুফল ও সুন্দর ভবিষ্যতের প্রত্যাশার দিকগুলো আবার তুলে ধরেন রাজশাহী আলোর পাঠশালার শিক্ষকেরা।

এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ছিল পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ভর্তি নিশ্চিত করা, যাদের অভিভাবকরা ষষ্ঠ শ্রেণিতে আর স্কুলে পাঠাতে চাইছিলেন না। চর খানপুরের এক অভিভাবক জানান, পদ্মা নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় প্রায় তিন কিলোমিটার পথ হেঁটে এসে তারপর নৌকায় উঠতে হয়, যার ফলে বাচ্চারা ক্লান্ত হয়ে যায়। মূলত এই কঠিন পথের কারণেই তারা সন্তানদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করতে চেয়েছিলেন।

তবে আলোর পাঠশালার শিক্ষকেরা হাল ছাড়েননি। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ লক্ষ্য করে তাঁরা অভিভাবকদের কাছে শিক্ষার সুফল ও সুন্দর ভবিষ্যতের প্রত্যাশার দিকগুলো আবার তুলে ধরেন। শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে অবশেষে অভিভাবকরা তাঁদের ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে রাজি হয়েছেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিক্ষকদের এই প্রচেষ্টা সফলভাবে সম্পন্ন হয়।